• যোগাযোগ
  • অভিযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    ডিজিটাল সহিংসতা প্রতিরোধে বাংলাদেশ: জাতীয় সংলাপ ও ভবিষ্যৎ করণীয় 

     dailybangla 
    25th Nov 2025 10:38 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমান প্রযুক্তিনির্ভর যুগে বাংলাদেশের নারী ও কন্যারা ক্রমবর্ধমান হারে ডিজিটাল সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়া, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যমে তাদের মর্যাদা, নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা প্রতিনিয়ত হুমকির মুখে পড়ছে। এ জটিল বাস্তবতাকে মোকাবিলা করতে সরকার, জাতিসংঘ, উন্নয়ন অংশীদার, তরুণ নেতৃত্ব এবং প্রযুক্তিখাতের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় ‘নারী ও কন্যাদের প্রতি ডিজিটাল সহিংসতা বন্ধে ঐক্যবদ্ধ হই’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপ।

    সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, ডিজিটাল সহিংসতা এখন আর ব্যক্তি বা স্থানীয় কোনো গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই; এটি বৈশ্বিক একটি সাইবার বাস্তবতা। সাইবার বুলিং এমনই বিস্তৃত যে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তের মানুষ একজন নারীর মর্যাদার উপর হামলা চালাতে পারে। তার মতে, প্রযুক্তির উন্নতি অনিবার্য হলেও মানুষের মনোভাব ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনই মূল সমাধান। উদ্বেগজনক তথ্য দিয়ে তিনি জানান, ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৫৯ শতাংশ নারী অনলাইনে হয়রানির শিকার, যদিও অভিযোগ করে মাত্র ৯০ শতাংশ নারী। দেশে সাইবার অপরাধ দমনে আইন থাকলেও তার যথাযথ প্রয়োগের অভাব অপরাধীদের উৎসাহিত করছে।

    সরকারি পর্যায়ের অন্যান্য প্রতিনিধিও সমন্বিত উদ্যোগের গুরুত্ব তুলে ধরেন। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ শক্তিশালী আইন ও জনসচেতনতার ওপর গুরুত্ব দেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ আবু ইউছুফ উল্লেখ করেন যে ডিজিটাল সহিংসতা বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ, যেখানে বিশ্বব্যাংকের তথ্য মতে বিশ্বের ৪০ শতাংশেরও কম দেশে নারীদের অনলাইন নিরাপত্তার সুনির্দিষ্ট আইন রয়েছে। ফলে ১.৮ বিলিয়ন নারী আইনগত সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত।

    উন্নয়ন অংশীদারদের প্রতিনিধিরাও বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরেন। অস্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার সুসান রাইল বলেন, ডিজিটাল সহিংসতা শুধু নারীর সমস্যা নয়, এটি সমগ্র সমাজের সমস্যা। সুইডেনের রাষ্ট্রদূত নিকোলাস উইক্স বিদ্যমান আইন বাস্তবায়নের অপরিহার্যতার কথা বলেন, যা ভিকটিমদের ন্যায়বিচারের পাশাপাশি অপরাধীদেরও বার্তা দেবে। ইউএন উইমেন প্রতিনিধি গীতাঞ্জলি সিংহ অনলাইন হয়রানির বহুমাত্রিক প্রভাব তুলে ধরে বলেন, ডিজিটাল সহিংসতা প্রায়ই অফলাইনে ছড়িয়ে পড়ে এবং নারীর জনজীবনে অংশগ্রহণ সীমিত করে।

    প্যানেল আলোচনায় বিশেষজ্ঞরা প্রযুক্তি-নির্ভর সহিংসতা মোকাবিলায় বাংলাদেশে ঘাটতি, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার বিশ্লেষণ করেন। তারা জানান, প্রমাণভিত্তিক নীতি প্রণয়ন, কার্যকর আইন প্রয়োগ, নারীদের ডিজিটাল সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং অনলাইন ক্ষতির ঘটনায় সমন্বিত জাতীয় প্রতিক্রিয়া কাঠামো—সবই এ মুহূর্তে জরুরি।

    ইউএনএফপিএ প্রতিনিধি ক্যাথরিন ব্রিন কামকং সমাপনী বক্তব্যে বলেন, প্রযুক্তি-নির্ভর জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা বাস্তব এবং তা অন্য যে কোনো ধরনের সহিংসতার মতোই গুরুত্ব পাওয়া উচিত। আইন, তদন্ত কাঠামো ও প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থার উন্নয়ন ছাড়া এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।

    ২০২৫ সালের “১৬ ডেজ অব অ্যাক্টিভিজম” উপলক্ষে এই জাতীয় সংলাপ বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি মোড়ঘোরানো মুহূর্ত। বেইজিং প্ল্যাটফর্ম ফর অ্যাকশনের ত্রিশ বছরপূর্তিতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ প্রযুক্তি-নির্ভর সহিংসতা নির্মূলে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাত, সিভিল সোসাইটি, তরুণ সংগঠন ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সমন্বিত পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা আরও স্পষ্টভাবে উপলব্ধি করছে।

    বিআলো/তুরাগ

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    November 2025
    M T W T F S S
     12
    3456789
    10111213141516
    17181920212223
    24252627282930