ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ: গ্যাস সংকটে যাত্রাবাড়ীর জনজীবন বিপর্যস্ত
এস এম শাহ জালাল সাইফুল : ঢাকার যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়া, শেখদী, গোবিন্দপুরসহ আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে তীব্র গ্যাস সংকটে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। রান্নাবান্না বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সব কাজ ব্যাহত হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
এ সংকটের দ্রুত ও স্থায়ী সমাধানের দাবিতে সোমবার (৮ ডিসেম্বর ২০২৫) সকাল থেকে যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়া এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন ভুক্তভোগীরা। এতে নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। অবরোধের ফলে মহাসড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়ে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছে যায়।
“ছয় মাস ধরে গ্যাস নেই”
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে গ্যাসের চাপ এত কম যে দিনে একবারও গ্যাস পাওয়া যায় না। প্রায় ছয় মাস ধরে কার্যত গ্যাস সরবরাহ বন্ধ। তিতাস গ্যাসসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বহুবার অভিযোগ করেও কোনো কার্যকর সমাধান মেলেনি।
এমডির আশ্বাসেও ফল মেলেনি
ঢাকা-৫ আসনের বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশী আলহাজ্ব নবী উল্লা নবী সম্প্রতি কাওরান বাজারে তিতাস গ্যাসের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সে সময় এমডি এক মাসের মধ্যে সমস্যার সমাধানের আশ্বাস দেন।
কিন্তু এক মাস পেরোলেও পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থেকে আরও অবনতি ঘটেছে। এরই প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ জনতা মহাসড়ক অবরোধে নামতে বাধ্য হন।
২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
অবরোধকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন—
“আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। প্রয়োজনে অনির্দিষ্টকাল মহাসড়ক অবরোধ চলবে।”
পুলিশের ডিসির আশ্বাসে অবরোধ প্রত্যাহার
অবরোধ চলাকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের দক্ষিণ বিভাগের একজন ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) ঘটনাস্থলে এসে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলেন—
“২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্যাস স্বাভাবিক না হলে আপনাদের আন্দোলনের পাশে আমিও থাকবো।”
ডিসির আশ্বাস ও অনুরোধে এলাকাবাসী সাময়িকভাবে অবরোধ তুলে নেন।
জনদুর্ভোগ চরমে
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গ্যাস না থাকায় দৈনন্দিন রান্না করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বাধ্য হয়ে অনেকে বাইরে থেকে খাবার কিনে খাচ্ছেন, যা ব্যয়বহুল হওয়ায় সাধারণ মানুষের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ছেন শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী ও শ্রমজীবী মানুষ।
এলাকাবাসীর একটাই দাবি—
“অবিলম্বে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক করতে হবে, নয়তো আরও বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে।”



