দুই বছর ধরে বিদেশি মুদ্রা পাচার করতেন জাহাঙ্গীর

দুই বছর ধরে বিদেশি মুদ্রা পাচার করতেন জাহাঙ্গীর

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ থেকে ইস্তাম্বুল হয়ে মিশরে পাচারের জন্য জব্দ করা ১১ লাখ ২০ হাজার রিয়াল নিয়ে যাচ্ছিলেন গ্রেফতার জাহাঙ্গীর গাজী। এসব মুদ্রা দিয়ে স্বর্ণ কেনা হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর মূল্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা।

সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কেনপি-১ এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জিয়াউল হক।

এর আগে, গতকাল সোমবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তার্কিস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে এসব মুদ্রা পাচারের জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় সন্দেহভাজন হিসেবে যাত্রী জাহাঙ্গীর গাজীকে গ্রেফতার করে এপিবিএন
সদস্যরা। জাহাঙ্গীরের গন্তব্য ছিলো তুরস্ক। অত্যন্ত সুকৌশলে লাগেজে ১০টি সার্টের মধ্যে লুকায়িতভাবে ১১ লাখ সৌদি রিয়ালসহ ৮টি দেশের মুদ্রা নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত এসপি মো. জিয়াউল হক বলেন, জাহাঙ্গীর গাজী ভোর সাড়ে ৬টার দিকে তার্কিস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে করে ইস্তাম্বুল যাওয়ার উদ্দেশে বিমানবন্দরে আসেন। সন্দেহভাজন হিসেবে প্রথমে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ৫০ হাজার রিয়ালের কথা বলেন। পরে তার লাগেজ তল্লাশি করে ১১ লাখ ২০ হাজার সৌদি রিয়ালসহ আরও ৮টি দেশের মুদ্রা পাওয়া যায়। এরমধ্যে ইউএস ডলার, মালশিয়ান রিঙ্গি, কুয়েতি দিনার সব বিভিন্ন মুদ্রা পাওয়া যায়।

তিনি বলেন, গ্রেফতার আসামি প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, আগে রাজধানীর গুলিস্তানে কাপড়ের ব্যবসা করতেন জাহাঙ্গীর। গত দুই বছর ধরে তিনি ওই ব্যবসা বাদ দিয়ে অর্থ পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। আমরা তার পাসপোর্ট পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি, পাঁচটি দেশের ভিসা তার রয়েছে।

ইমিগ্রেশনের ১২৫টি সিল লাগানো আছে। ৬৫ বার তিনি দেশের বাইরে যাতায়াত করেছেন। সাধারণত আমরা দেখি কমার্শিয়াল যাত্রীদের জন্য সরকার যে সুবিধাটি দেয় তারা বিভিন্ন প্রোডাক্ট বিক্রি করে একটা লাভের অংশ নিয়ে নেয়। কিন্তু সেই লাগেজ ব্যবসা থেকে তিনি হুট করে পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায, বিভিন্ন প্রবাসীর কাছ থেকে এসব রিয়াল সংগ্রহ করে তা একত্রিত করে পাচার করা হতো। এতে বাংলাদেশ সরকার কোনো রাজস্ব সরকার পায় না। এই কারেন্সিগুলো ইস্তাম্বুল হয়ে মিশরে পাচার হওয়ার কথা ছিলো বলেও জানায় গ্রেফতার আসামি জাহাঙ্গীর গাজী।

তিনি বলেন, এই কারেন্সি বহন বা পাচারের জন্য গ্রেফতার আসামিকে অন্তত চার-পাঁচ লাখ টাকা দিতেন চক্রের সদস্যরা। ধারণা করা হচ্ছে, এখান থেকে টাকা চলে যাচ্ছে। পরে সেখানে গিয়ে বাল্ক অ্যামাউন্টে গোল্ড কেনা হতে পারে। সেগুলো আবার বাংলাদেশে আসতে পারতো।

তিনি বলেন, এতে দুই দিকেই বাংলাদেশ সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হতো। কারণ, একদিকে টাকা পাচার হচ্ছে, অন্যদিকে অবৈধভাবে ট্যাক্স ছাড়া স্বর্ণ বাংলাদেশে পাচার হতো। এই দুটি কাজেই বাংলাদেশ সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হতো।

বিআলো/শিলি