ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডই হবে : মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী

ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডই হবে : মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা বলেছেন, ধর্ষণ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে সরকার তৎপর এবং ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডই হবে।

তিনি বলে, “নীতি-নৈতিকতা বিবর্জিতরাই ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত। ধর্ষণ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে সরকার তৎপর। তবে পরিবারেরও দায়িত্ব রয়েছে। নিজেদের শিশুদের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। পরিবার থেকেই নৈতিক শিক্ষা দিতে হবে। ধর্ষকেরা পরিবারের বাইরে নয়। এরাও সমাজের অংশ। কিন্তু ধর্ষকের পরিচয় শুধুই ধর্ষক। সে যেই হোক। এদের সমাজের সর্বস্তর থেকে বর্জন করেত হবে। ধর্ষণের শাস্তি মৃতুদণ্ড দেওয়ার উদ্যোগ প্রমাণ হয় যে আওয়ামী লীগ সরকারই পারে নারীর নিরাপত্তা দিতে। ”

প্রতিমন্ত্রী শনিবার (১০ অক্টোবর) মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সিলিং সেন্টার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগ এবং বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জুম প্লাটফর্মে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

ফজিলাতুন নেসা আরও বলেন, “কোভিড-১৯ উন্নত ও অনুন্নত সকল দেশের সব বয়সের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। শিশুরা সবচেয়ে বেশি মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আরও গুরুত্ব দিতে হবে।

বর্তমান সরকারের একান্ত প্রচেষ্টায় মানুষের মধ্যে স্বাভাবিক জীবন ফিরে আসতে শুরু করেছে। অচিরেই এই সংকট কেটে যাবে। আবার শিশুরা মাঠে খেলবে ও স্কুলে যাবে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার সকল বিভাগীয় শহর ও ফরিদপুরে করোনাকালীন পরিস্থিতিতে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপশি টেলিফোনে ও অনলাইনে ২৪ ঘণ্টা মনোসামাজিক কাউন্সেলিং সেবা দিয়ে আসছে। ”

মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি ও সবার জন্য মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালিত হয়েছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘সবার জন্য মানসিক স্বাস্থ্য: অধিক বিনিয়োগ- অবাধ সুযোগ’।

বাংলাদেশ সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোশিয়েশন ও বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটির প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমানের সভাপতিত্বে ওয়েবনিয়ারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. বর্ধন জাং রানা, ঢাবির সাইকোলজি বিভাগের চেয়ারপারসন মোছাম্মৎ নাজমা খাতুন ও ড. আবুল হোসেন।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কোভিড আমাদের শিখিয়েছে কিভাবে সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে। সকলের সহযোগিতা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টায় মানসিক স্বাস্থ্য সেবার মান বৃদ্ধি করতে হবে। ”

অধ্যাপক মোছাম্মৎ নাজমা খাতুন তার মূল প্রবন্ধ উপস্থানায় বলেন, “মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তিদের গড় আয়ু সুস্থদের তুলনায় ১৫-২০ বছর কম। কম বাজেট বরাদ্ধের কারণে কম সংখ্যক মানুষ মানসিক স্বাস্থ্য সেবা পেয়ে থাকে। ”

আজকের ওয়েবনিয়ারে করোনাকালে ও মানসিক স্বাস্থ্য সেবার বিভিন্ন বিষয়ে ক্লিনিক্যাল সাইক্লোজিস্টগণ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে প্রতি চারজনে একজন ব্যক্তি তাদের জীবনদশায় মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত হয়। এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৯৯২ সাল থেকে প্রতি বছর ১০ অক্টোবর দিবসটি পালন করে আসছে।

বি আলো / মুন্নী