নদী দখলকারীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার আহ্বান: আরিফ উদ্দিন
এফ এইচ সবুজ: নদী দখল ও দূষণের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) একেএম আরিফ উদ্দিন বলেন, একজন ঋণখেলাপি যদি নির্বাচনে অযোগ্য হয়, সেক্ষেত্রে নদী দখল-দূষণকারী কেন অযোগ্য হবে না? নদী রক্ষা কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী নদী দখলকারীদের নির্বাচনে যোগ্য বিবেচিত হওয়া উচিত নয়। এটি অবিলম্বে কার্যকর করা দরকার।
২৪ অক্টোবর (শুক্রবার) সন্ধ্যায় ঢাকার বিআইডব্লিউটিএ’র নতুন টার্মিনাল ভবনে তরী বাংলাদেশ আয়োজিত ‘নদী সুরক্ষা’ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় এ বক্তব্য রাখেন আরিফ উদ্দিন। সভায় উপস্থিত ছিলেন লেখক, সাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মী, পরিবেশবাদী নেতৃবৃন্দ এবং বিআইডব্লিউটিএর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।
আরিফ উদ্দিন বলেন, মহামান্য হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই নদীকে জীবন্ত সত্তা হিসেবে ঘোষণা করেছে। এই অর্থে নদীর দখল-দূষণকে প্রাণ হত্যার মানদণ্ডে বিবেচনা করা উচিত। আমাদের সমাজে এই বোধ তৈরি করতে পারলে নদী দখল ও দূষণ অনেকাংশেই কমে যাবে। বর্তমানে নদীর ব্যাপক দখল রাজনৈতিক প্রভাব ও ছত্রছায়ায় হচ্ছে, যা অবিলম্বে রোধ করা জরুরি। তিনি এ ছাড়াও সারাদেশে নৌপথ সম্প্রসারণ ও তিতাস নদীতে নৌ যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তরী বাংলাদেশের আহ্বায়ক শামীম আহমেদ বলেন, আমাদের দেশে প্রায় ২৪ হাজার কিলোমিটার নৌপথ ছিল, এখন মাত্র ৬ হাজার কিলোমিটার সচল। বাকি ১৮ হাজার কোথায় গেছে, এটি আমাদের বড় প্রশ্ন। নদী রক্ষা ও নৌপথ পুনরুদ্ধারে সরকারের সহযোগিতা অপরিহার্য।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্য বক্তারা নদী রক্ষা ও নৌপথ সচল রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দেন। রিভারাইন পিপল-এর মহাসচিব শেখ রোকন বলেন, নদী ভালো থাকলে আমরা এটিকে বহুমাত্রিকভাবে ব্যবহার করতে পারি। দীর্ঘ নৌপথ পুনরুদ্ধার ও সচল করার জন্য সকলকে উদ্যোগী হতে হবে।
সেন্টার ফর ল’ এন্ড পলিসি অ্যাফেয়ার্স-এর সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, যারা নদী দখল ও দূষণ করছেন, তাদের নাম ও ছবি জনসম্মুখে প্রকাশ করা উচিত এবং আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক শেখ আদনান ফাহাদ এবং পরিবেশ আন্দোলন মঞ্চ-এর সাধারণ সম্পাদক জিএম রুস্তম খানও নদী রক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন-এর সমন্বয়ক মিহির বিশ্বাস বলেন, নদীর জায়গা উদ্ধারের পাশাপাশি এর রক্ষণাবেক্ষণেও মনোযোগ দিতে হবে।
তরী বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ সারাদেশের নদী, খাল ও জলাশয় দখল-দূষণের বিরুদ্ধে কাজ করে আসছে। “তিতাস থেকে বুড়িগঙ্গা” অভিযাত্রার মাধ্যমে তারা নৌপথ পুনরুদ্ধার, অবৈধ দখল উচ্ছেদ, খালের সংযোগ নিশ্চিতকরণ এবং নৌপথে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের গুরুত্ব বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছে।
মতবিনিময় সভায় তরী বাংলাদেশ-এর আহ্বায়ক কমিটির সদস্যসহ নদী ও পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীও উপস্থিত ছিলেন।
বিআলো/এফএইচএস



