নরসিংদীতে যুবলীগ নেতার ৭ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ ক্রোক করল দুদক
নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদীর পলাশে যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন দেলুর প্রায় সাত কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ ক্রোক করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে দুদক সম্মিলিত জেলা কার্যালয় গাজীপুর-এর সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হকের নেতৃত্বে উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের কাজিরচরে আদালতের নির্দেশনায় দেলুর অবৈধ সম্পদ ক্রোক করা হয়। এসময় পলাশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুবক্কর সিদ্দিকী রিসিভার হিসেবে দায়িত্ব নেন।
দেলোয়ার হোসেন দেলু পলাশ উপজেলার কাজিরচর গ্রামের মো. সুরুজ আলীর ছেলে এবং ডাঙ্গা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি।
দুদক জানায়, দেলুর বিরুদ্ধে ৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগে দুদকের গাজীপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. এনামুল হক মামলা দায়ের করেন। মামলায় দেলুর ৬ কোটি ৮১ লাখ টাকার সম্পদ অবৈধ প্রমাণিত হওয়ায় এগুলো ক্রোক করে সরকারের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করা হয়। পরে নরসিংদীর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ হুমায়ুন কবীর সম্পদ ক্রোক ও রিসিভার নিয়োগের আদেশ দেন।
আদালতের সেই নির্দেশনা অনুযায়ী সোমবার দুপুরে দুদকের দল দেলুর অবৈধ সম্পদ ক্রোক করে পলাশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুবক্কর সিদ্দিকীর কাছে হস্তান্তর করে।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. মশিউর রহমান, পলাশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুবক্কর সিদ্দিকী, নরসিংদী জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সিনিয়র সদস্য হলধর দাসসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
ক্রোককৃত সম্পদের মধ্যে রয়েছে—কাজিরচর গ্রামে ২৭ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত ২ হাজার ৩০৪ বর্গফুটের তিনতলা ডুপ্লেক্স বাড়ি, যার মূল্য ৩ কোটি ১৩ লাখ ২৭ হাজার ৪৪ টাকা। একই গ্রামে ৬ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত ৩ হাজার ৬৫০ বর্গফুটের পাঁচতলা ভবনের মূল্য ৩ কোটি ৬৮ লাখ ৮ হাজার ২৫৭ টাকা। মোট ৬ কোটি ৮১ লাখ ৩৫ হাজার ৩০১ টাকার সম্পদ ক্রোক করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেলোয়ার ডাঙ্গা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি হন। এরপর শীতলক্ষা নদী ও আশপাশের কৃষিজমি থেকে বালু উত্তোলন, চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েন তিনি। অভিযোগ রয়েছে, এসব কার্যক্রম পরিচালনার জন্য তিনি একটি সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনীও গড়ে তুলেছিলেন। গত ১৭ বছরে তিনি শত কোটি টাকার মালিক বনে যান। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ অর্ধশতাধিক মামলা রয়েছে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পলায়নের পর এলাকা ছেড়ে নিরাপদ স্থানে পালিয়ে যান দেলু।
পলাশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবুবক্কর সিদ্দিকী বলেন, আদালতের নির্দেশনায় দুটি ভবন ক্রোক করে রিসিভার হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছি। মামলার নিষ্পত্তির আগ পর্যন্ত এসব সম্পদ যাতে নষ্ট বা বিক্রি না হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে। ভবনগুলোর ভাড়াটিয়াদের দ্রুত সরে যাওয়ার জন্যও বলা হয়েছে।
বিআলো/ইমরান



