প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে ‘মুজিব আমার পিতা’র প্রিমিয়ার

প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে ‘মুজিব আমার পিতা’র প্রিমিয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সামনে রেখে আইসিটি ডিভিশনের অর্থায়নে নির্মাণ হয়েছে ‘মুজিব আমার পিতা’ চলচ্চিত্রটি। দেশের প্রথম ফিচার-লেংথ অ্যানিমেশন চলচ্চিত্রটির কাহিনী রচনা করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ লেখা অবলম্বনে।

আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিনে এ চলচ্চিত্রটির প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠিত হবে এবং ১ অক্টোবর থেকে টিকিটের মাধ্যমে সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে সিনেমাটির টেকনিক্যাল শো শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে এটি হবে দেশের সব শিশু-কিশোর ও তরুণদের জন্য একটি উপহার। কেননা বঙ্গবন্ধুকে শিশু-কিশোররা অ্যানিমেশন চলচ্চিত্রের মধ্যে দিয়ে জানবে, এর থেকে ভালো আর কী হতে পারে। ২৮ সেপ্টেম্বর বিকেল ৪টায় এটির প্রিমিয়ার শো অনুষ্ঠিত হবে। ২৮, ২৯ ও ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় এটির বিশেষ প্রদর্শনী থাকবে শিশু, শিক্ষার্থী, অভিনেতা-অভিনেত্রী ও চলচ্চিত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিসহ বিশিষ্টজনদের জন্য। এরপর ১ অক্টোবর থেকে টিকিটের মাধ্যমে সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, টিকিটের মাধ্যমে উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে এ চলচ্চিত্রে টিকিটের মূল্যে ৫০ শতাংশ ছাড় থাকবে। এরপর আমরা আশা করছি এটি দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে বিশ্বের বিভন্ন স্থানে ছড়িয়ে দিতে পারবো এবং তারপর এটি বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রচারের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এটি সারাদেশে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হবে। নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোরদের কাছে বঙ্গবন্ধুর জীবনের গল্প পৌঁছে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। আমার মনে হয় ওদেরকে জানানোর জন্য অ্যানিমেশনের চেয়ে ভালো মাধ্যম আর হতে পারে না। একইভাবে বঙ্গবন্ধুর ছেলেবেলা সম্পর্কে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেয়ে ভালো আর কেউ বলতে পারবে না। এ দুইয়ের যুগলবন্দি করা হয়েছে চলচ্চিত্রটিতে।

পলক বলেন, এ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করতে গিয়ে আমরা অনুভব করেছি যে এ ধরনের কাজ আরও করা যায়। কেননা ৪৮ মিনিটের এ সিনেমাটিতে শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের একটি অংশই আমরা ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি। তাই এর পর ‘মুজিব ভাই’ নামে নতুন আরও একটি চলচ্চিত্র ও ‘খোকা’ নামে ১০ পর্বের অ্যানিমেটেড ফিল্ম তৈরি করা হবে বলে আশা করছি।

সিনেমাটির টেকনিক্যাল শো শেষে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল মোহাম্মদ রানা, রিসার্চ কো-অর্ডিনেটর তন্ময় আহমেদ, সহযোগী মাহবুবুর রহমান জুয়েল, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।

পরিচালক সোহেল মোহাম্মদ রানা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী নিয়ে চলচ্চিত্র বানানোর চেয়ে সম্মানের আর কিছু হতে পারে না। আর আমাদের দেশে বসে টুডি অ্যানিমেশন মাধ্যমে ফিচার লেংথ সিনেমা বানানো তো স্বপ্নের মতো একটি ব্যাপার। ৪৮ মিনিট দৈর্ঘ্যের এ চলচ্চিত্রের কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালে। দীর্ঘ গবেষণা ও নিবিড় তত্ত্বাবধানে প্রস্তুত করা হয় এটি। আমরা চাই দেশে এ ধরনের কাজ ধারাবাহিক হোক।

মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ নির্মাণ করেছে অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র ‘মুজিব আমার পিতা’। সহযোগিতা করেছে বিএমআইটি সলুশনস লিমিটেড ও প্রোলেন্সর স্টুডিও। ১৬ সেপ্টেম্বর চলচ্চিত্রটি সেন্সর ছাড়পত্র পেয়েছে। এটি নির্মাণে কাজ করেছেন ৪৮ জন অ্যানিমেটর। লোকেশন ডিজাইন করেন ইব্রাহিম খলিল। কস্টিউমের পাশাপাশি কালার টিমের নেতৃত্ব দেন মনিরা আলম। ব্যাকগ্রাউন্ড টিমের নেতৃত্ব দেন পল্লব কুমার। পরিচালকের প্রধান সহযোগী হিসেবে কাজ করেন আরিফ সিদ্দিকী নিটোল।

সব মিলিয়ে কাজ করেছে ৩০০ জনের এক বিশাল দল। বিভিন্ন চরিত্রে কণ্ঠ দিয়েছেন ২০ জনের বাচিকশিল্পীর একটি দল। কেন্দ্রীয় চরিত্রগুলোতে কণ্ঠ দিয়েছেন মেহবুবা মেহনাজ বিপা, রাজু আহমেদ, মোহাম্মদ রফিক, তাহসিনা ফেরদৌস রিনিয়া, আবুল কালাম আজাদ সেতু, মেরিনা মিতুসহ অনেকে।

চলচ্চিত্রটির তিনটি গানের মধ্যে স্থান পেয়েছে গীতিকার গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার ও শ্যামল মিত্রের কণ্ঠের গান ‘তোমার সমাধি ফুলে ফুলে ঢাকা’। এ চলচ্চিত্রে গানটি নতুন করে গেয়েছেন মেঘদল ব্যান্ডের ভোকাল শিবু কুমার শীল। এরপর রয়েছে মো. শাহদাৎ হোসেন সৌমিকের কণ্ঠে ভাটিয়ালি গান ‘আমার মন যে কাঁদে রে জংলা- বাংলা মায়ের তরে’ ও নুসরাত জাহান ইরার কণ্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘তোমারও অসীমে প্রাণ মন লয়ে’।

বিআলো/ইলিয়াস