প্রান্তিক মানুষের সেবায়  অগ্রণী ‘দুয়ার’ ব্যাংকিং

প্রান্তিক মানুষের সেবায়  অগ্রণী ‘দুয়ার’ ব্যাংকিং

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক: বেশির ভাগ ব্যাংক যখন শহরমুখী তখন ‘দুয়ার ব্যাংকিং’ নামে এজেন্টভিত্তিক সেবায় প্রান্তিক মানুষের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে অবদান রেখে চলছে অগ্রণী ব্যাংক।

বাংলাদেশে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ধারণা প্রথম নিয়ে আসে অগ্রণী ব্যাংক । ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপকের সঙ্গে যৌথ প্রকল্পে ২০১০ সালে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় পরীক্ষামূলক কার্যক্রম চালু করা হয়। ২০১১ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি এজেন্ট ব্যাংকিং করার নির্দেশনা আসে। রাষ্ট্রীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রথম ও একমাত্র অগ্রণী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা ইউনিয়ন পর্যায়ে নিয়ে গেছে। আমানত রাখা, ঋণ বিতরণ ও প্রবাস আয়  আনার পাশাপাশি তারা স্কুল ব্যাংকিং চালু করেছে।

গ্রামগঞ্জে সরকারের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির ভাতাও বিতরণ করছে এজেন্টরা। সব মিলিয়ে এজেন্ট ব্যাংকিং চাঙ্গা হওয়ার ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ গ্রামীণ অর্থনীতিও চাঙ্গা হচ্ছে।

বর্তমানে ৪০০ এজেন্টের মাধ্যমে দেশব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনা করছে অগ্রণী ব্যাংক। নিকটবর্তী শাখার তত্ত্বাবধানে নতুন হিসাব খোলা থেকে শুরু করে টাকা জমা দেওয়া, বিদ্যুৎ বিল জমাসহ প্রায় প্রয়োজনীয় সব আর্থিক সেবা পাওয়া যাচ্ছে।

সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে তাদের কমিউনিটির উদ্যোক্তার মাধ্যমে প্রচলিত ব্যাংকের প্রায় সব সুবিধা নিশ্চিত করছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংকের এই অন্তর্ভুক্তিমূলক সেবা। সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় সব আর্থিক সেবা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে এই উদ্যোগের মাধ্যমে। তাইতো নাম অগ্রণী দুয়ার ব্যাংকিং।

এজেন্ট ব্যাংকিং প্রসঙ্গে অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামস-উল-ইসলাম বলেন, দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ধারণা প্রথম নিয়ে আসে অগ্রণী ব্যাংক। ২০১০ সালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন স্বনামধন্য অধ্যাপকের সঙ্গে এক প্রকল্পের অংশ হিসেবে। সেটা ছিল কনসেপচুয়াল। পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা আসে এজেন্ট ব্যাংকিং নিয়ে।

প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আরো ২০০টি এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করার অনুমতি পেয়েছে অগ্রণী ব্যাংক, যেগুলো এ বছরের মধ্যেই বাস্তবায়ন হবে।

বর্তমানে সব এজেন্ট ব্যাংকিং ইউনিটে সঞ্চয়ী, চলতি, ডিপিএস, এফডিআর এবং স্কুল ব্যাংকিং, ভাতা হিসাবসহ সব ধরনের হিসাব খোলা, গোপন পিনে বিদেশি রেমিট্যান্সের টাকা তোলা যায়, বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল দেওয়া এবং বাস টিকিট কেনা যায়।

নতুন হিসাব খুললে প্রত্যেক গ্রাহক চাইলে ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা গ্রহণের জন্য এটিএম কার্ড নিতে পারেন, যার মাধ্যমে যেকোনো ব্যাংকের বুথ থেকে লেনদেন করা যায় খুব অল্প খরচে। সম্প্রতি এসব এজেন্ট পয়েন্ট থেকে শুরু হয়েছে ঋণ বিতরণও।