“প্রতিশোধ নয়, ক্ষমাই প্রকৃত বিজয়”, কুরআন-হাদিসের আলোকে
বিআলো ডেস্ক: মানুষের জীবনে অপমান-অবহেলা এসেছে, আসবে। রাগ উঠবে, প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছা জাগবে। কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে সবচাইতে বড় ও মধুর প্রতিশোধ হলো ‘ক্ষমা’। যে ক্ষমা করে, আল্লাহতাআলা তার মর্যাদা নিজ হাতে বাড়িয়ে দেন এবং জান্নাতের পথে টেনে নেন।
কুরআন যা বলে ক্ষমা সম্পর্কে
আল্লাহতাআলা সূরা আশ-শুরায় (আয়াত ৪০) ঘোষণা করেন: “যে ক্ষমা করে এবং সংশোধন করে, তার পুরস্কার আল্লাহর দায়িত্ব। নিশ্চয়ই তিনি যালিমদের ভালোবাসেন না।”
আর সূরা আল-ইমরানের ১৩৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে: “যারা রাগ সংবরণ করে এবং মানুষকে ক্ষমা করে, আল্লাহ মুহসিনদের (সৎকর্মশীলদের) ভালোবাসেন।”
হাদিসে ক্ষমার প্রতিদান
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : “আল্লাহতাআলা কোনো বান্দাকে ক্ষমা করার কারণে কখনো অপমান করেন না; বরং তার মর্যাদা-সম্মান বাড়িয়ে দেন।” (সহিহ মুসলিম: ৬৭৫৭)
নবীজীর জীবনই সর্বোচ্চ দৃষ্টান্ত মক্কা বিজয়ের দিন যারা বছরের পর বছর নবীজীকে পাথর মেরেছে, ঘর থেকে বের করে দিয়েছে, তাদের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বললেন:“যাও, তোমরা সবাই মুক্ত।”
একটি কথায় তিনি শত্রুকে বন্ধু বানিয়ে দিলেন। এটাই ক্ষমার সর্বোচ্চ পরাকাষ্ঠা।
সাহাবা-তাবেয়ী-মনীষীদের বাণী
* হজরত আলী (রা.): “শত্রুর ওপর সবচেয়ে বড় বিজয় হলো তাকে ক্ষমা করে দেওয়া।”
* হজরত ওমর (রা.): “প্রতিশোধ নেওয়া সহজ, কিন্তু ক্ষমা করা মহত্ত্বের কাজ।”
* ইমাম শাফি (রহ.): “যে ক্ষমা করে, সে ঘৃণার রোগ থেকে মুক্তি পায়।”
* হজরত হাসান বাসরি (রহ.): “ক্ষমা শুধু শক্তিশালী মানুষের পক্ষেই সম্ভব।”
কেন ক্ষমাই সবচেয়ে মধুর প্রতিশোধ?
* এতে শত্রুকে আঘাত করতে হয় না, বরং তার হৃদয় জয় করা যায়
* রাগ গিলে হৃদয় শান্ত হয়
* ভাঙা সম্পর্ক জোড়া লাগে
* আল্লাহর রহমত ও ভালোবাসা পাওয়া যায়
* ক্ষমাকারীই আল্লাহর কাছে ও মানুষের কাছে সম্মানিত হয়
* নিজের আত্মা পবিত্র থাকে
বিশিষ্ট আলেমগণ বলেন, যে ব্যক্তি ক্ষমা করে, সে নিজেই প্রথম মুক্ত হয়- রাগের শৃঙ্খল ও ঘৃণার বোঝা থেকে। প্রতিশোধ ক্ষতকে বাড়ায়, ক্ষমা ক্ষত সারিয়ে দেয়। আল্লাহতাআলা আমাদের সবাইকে ক্ষমাশীল হৃদয় দান করুন এবং ক্ষমার মাধুর্য উপভোগ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
বিআলো/শিলি



