ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে বোরো উৎসব

ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে বোরো উৎসব

সেতু আক্তার, ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি: পাকা ধানের ম-ম গন্ধে ঐতিহ্যের সাথে প্রযুক্তির মিশ্রনে বোরো উৎসবের সূচনা করলেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। আজ ২৭ এপ্রিল, ২০২১ খ্রিস্টাব্দ মঙ্গলবার দুপুরে জেলার সদর উপজেলার বাইপাস এলাকার ফরিদপুরের বাতাসে বয়ে চলা চিরচেনা পাকা ধানের ম-ম গন্ধে চিরায়ত ঐতিহ্যের সাথে প্রযুক্তির সংমিশ্রনে ধান কর্তনের মাধ্যমে বোরো উৎসবের সূচনা করলেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার।

কৃষক রফিকুল ইসলামের সাড়ে ১৬ শতাংশ জমির পাকা বোরো ধান কর্তনের মাধ্যমে এ উৎসবের সূচনা হয়। চলছে গ্রীষ্মকাল বৈশাখের শুরুতেই বোরো ধান পরিপক্ক হতে শুরু করে। সপ্তাহ দুয়েক পার হতে না হতেই ধান কর্তনের উপযোগী হয়। এসময় কৃষক-কৃষানীদের মাঝে এক উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা যায়। বাঙ্গালির ঐতিহ্যময় এক উৎসব বোরো ধান কর্তনের সূচনা। যুগযুগ ধরে সনাতনী পদ্ধতিতে কৃষক কৃষানী মাথাইল মাথায় দিয়ে কাস্তে নিয়ে গান গাইতে গাইতে ধান কর্তন করত। বোরোর উৎপাদন বেড়েছে। সময়ও পাল্টেছে।

বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কৃষি নিয়ে সুদূর প্রসারী চিন্তার অংশ কৃষিতে প্রযুক্তির আননয়ন। তারই অংশ হিসেবে ধান কর্তনেও এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। অতিদ্রুত ও কমশ্রমে অধিক হারে ধান কর্তনের যান্ত্রিক ছোয়া এগিয়ে নিচ্ছে কৃষককে। এবারে আবহাওয়া ধানের অনুকূলে থাকায় ফরিদপুর জেলায় বোরো আবাদ ভাল হয়েছে। ফরিদপুরের বাতাসে এখন পাকা ধানের ম-ম গন্ধ। বৈশাখের মাঝামাঝি সময়ে চিরচেনা এ রূপ চোখে পড়ে। বোরো ধান কর্তনের মৌসুম আসলেই ফরিদপুরবাসির মানসপটে ভেসে উঠে ঠা-ঠা রোদ মাথায় নিয়ে কৃষকের ক্ষেতে ধান কাটার দৃশ্য।

সেই সোনালি ধান মাথায় কিংবা কাঁধে বয়ে নিয়ে যাওয়া, মাড়াই। কিষানির মনের আনন্দে মাড়াই করা ধান বাতাসে ওড়ানো, খোলাতে ধান শুকানো। বিকেলের শান্ত রোদে শুকনো ধান গোলায় ভরা। চাষাবাদের শুরু থেকেই ধান কাটার এ উৎসবে শুধু কিষান-কিষানি নন, বাড়ির সব বয়সী মানুষই যোগ দেন।

এ এক অন্য রকম উৎসব। চলে বৈশাখজুড়ে। ফসল গোলায় তোলার এ উৎসবের কাছে কাঠফাটা রোদ, বৈশাখের ঝড়-বৃষ্টি সবই যেন তুচ্ছ। ধানের সবুজ শিষের রং যখন লালচে হতে শুরু করে, তখন কৃষকের মনের রং বদলায়। চোখ-মুখ খুশিতে ভরে ওঠে। প্রস্তুতি শুরু করেন ধান কাটার। মাথাইল মাথায় কাস্তে হাতে ধান কর্তনের ঐতিহ্য বজায় রাখেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। অতঃপর শুরু হয় কম্বাইন্ড হারভেস্টারের মাধ্যমে ধান কর্তন।

বোরো ধান কর্তন উৎসবে ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মাসুম রেজা সভাপতিত্ব করেন। উপস্থিত ছিলেন কৃষিবিদ ড. হযরত আলী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুর রাজ্জাক মোল্লাসহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তাব্যক্তিবৃন্দ।

কর্তন উৎসবে জেলা প্রশাসকব অতুল সরকার বলেন, কৃষি উৎপাদনে ফরিদপুর পিছিয়ে নেই। আমরা কৃষকদের উৎসাহিত করা এবং তাদের প্রতি ভালবাসার অংশ হিসেবে সম্পৃক্ত হয়েছি। জেলা প্রশাসক আরো বলেন, কৃষকদের দুঃখে এবং আনন্দে সব সময় সাথে রয়েছি।

 বিআলো/শিলি