বাউফলে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রকে নির্যাতনের অভিযোগ
মো. তরিকুল ইসলাম মোস্তফা,বাউফল (পটুয়াখালী): পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় ইক্বরা ইসলামিক মডেল একাডেমির তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আদিল (৮)কে তার পিতা এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষক আল আম্মিন বাইজিদ মারধর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পর শিশুটির কানের পর্দা ছিঁড়ে গেছে বলে চিকিৎসকের রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, গত বুধবার ক্লাস চলাকালে এক ছাত্র হেসে উঠলে আদিলও হাসে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষক বাইজিদ প্রথমে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন এবং পরে শিশুটির মাথা ধরে টেবিলে আছড়ে দেন। এতে তার কানের গোড়ায় আঘাত লাগে। পরে বরিশাল ইসলামি হাসপাতালে পরীক্ষায় তার কানের পর্দা ছিন্ন হয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়।
আদিলের মা লিমা আক্তার জানান, বাসায় ফিরে ছেলের কান ফুলে থাকতে দেখে কারণ জানতে চাইলে সে ভয় পেতে পেতে সব বলে। চিকিৎসক জানিয়েছেন, তার কানের পর্দা ছিঁড়ে গেছে।
একই প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন অভিভাবক জানান, এ বিদ্যালয়ে শারীরিক শাস্তি নিয়মিত ঘটনা। শিক্ষকরা প্রায়ই ধাক্কাধাক্কি ও বেত্রাঘাত করেন বলে অভিযোগ তাদের।
অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষক বাইজিদ বলেন, তিনি এতটা মারেননি এবং হয়তো শারীরিক দুর্বলতার কারণে এমন সমস্যা হয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মুশফিকুর রহমান বলেন, যেভাবেই হোক ঘটনা ঘটেছে এবং বিদ্যালয়ের সুনাম রক্ষায় শিক্ষক বাইজিদকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে।
সরেজমিনে প্রতিষ্ঠানটিতে একাধিক অনিয়ম চোখে পড়ে। শ্রেণিকক্ষে গ্যাস চুলা ও রান্নার সরঞ্জাম রাখা, ক্লাসের পাশেই তীব্র দুর্গন্ধযুক্ত টয়লেট, অনুপযুক্ত ভবনে স্কুল পরিচালনা, সংকীর্ণ সিঁড়ি—সব মিলিয়ে এটি শিক্ষার্থীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করেছে।
এগুলো শিশু আইন ২০১৩, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০, বাংলাদেশ জাতীয় ভবন কোড (BNBC) এবং প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নীতিমালা লঙ্ঘন বলে মনে করেন অভিভাবকরা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম বলেন, বাণিজ্যিক বা আবাসিক ভবনে স্কুল পরিচালনা বেআইনি। দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিভাবক ও স্থানীয়রা বিদ্যালয়টির কার্যক্রম তদন্ত করে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন।
বিআলো/ইমরান



