বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল রক্ষায় কাউন্সিলরের ডাকে সাড়া দিলেন মেয়র

বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল রক্ষায় কাউন্সিলরের ডাকে সাড়া দিলেন মেয়র

 

ইবনে ফরহাদ তুরাগ:  রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থানার আওতাধীন বুড়িগঙ্গার পাড় ঘেষে অবস্থিত ডিএসসিসির ৫৭ নং ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে অবস্থিত বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল। কিন্তু এই আদি চ্যানেলকে ঘিরে রয়েছে বিশাল বিশাল ময়লার স্তুপ। প্রায় ৪ লক্ষ মানুষের বসবাসরত এ এলাকায় একটিও ময়লার সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এস.টি.এস) না থাকায় ওয়ার্ডের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান প্রতিনিয়ত এখানে ময়লা ফেলে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করে আসছে । ফলে জনগণ  এখানে নানা দুর্ভোগ পোহাত।

এ নিয়ে গত বুধবার, ডিএসিসির সকল কাউন্সিলরদের সমন্বয়ে গঠিত এক ভিডিও কনফারেন্সে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়রের সাথে ওয়ার্ড এর লক-ডাউন ও সময়সাময়িক সমস্যা নিয়ে আলোচনাকালে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেল রক্ষা ও এলাকার প্রবেশ মুখ থেকে ময়লা অপসারণ করে জনগনের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য মাননীয় মেয়রকে অনুরোধ করেন স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাইদুল ইসলাম মাদবর।

মেয়রের সাথে আলাপকালে ৫৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী মোঃ সাইদুল ইসলাম মাদবর বলেন, আমার ওয়ার্ডের ময়লাগুলো যেখানে রাখা হয় সেটা হল বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেলের পাশে। আর আমার ওয়ার্ডে কোন ময়লার এস, টি, এস নাই। যার জন্য বেরিবাধের রাস্তাটা সম্পূণ যানযট লেগে যায়। ময়লাগুলো এখান থেকে প্রতিদিন ১০ টন নেওয়ার কথা বা ১৫ টন। সেখানে সর্বোচ্চ ময়লা এক গাড়ি নেয় কিনা সন্দেহ আছে। মেয়র মহাদোয় আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এই ময়লাগুলো না নেওয়ায় এলাকার মানুষগুলো খুব দুর্ভোগে পড়ে আছে এবং বাড়ির ভাড়াটিয়াগুলোও চলে যাচ্ছে।

এ সময় বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেলের ময়লা সরাতে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপসকে অনুরোধ জানান ৫৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী মোঃ সাইদুল ইসলাম মাদবর।

এরই ফলশ্রুতিতে ভিডিও কনফারেন্স এ কাউন্সিলরের ডাকে সাড়া দিলেন মেয়র এবং এর পরদিন থেকেই থেকে ময়লা অপসারণ করতে শুরু করে ঢাদসিক। ইতিমধ্যে এখান থেকে গত ৫ দিনে ১০০ ট্রাকের বেশী ময়লা অপসারণ করা হয়েছে বলে দাবি করেন ডিএসসিসি। তবে দৃশ্যমান এখানে অর্ধেকের বেশি ময়লা অপসারণ হওয়ায় সস্থির নিস্বাস ফেলছে এলাকাবাসী। এলাকার এই দুর্ভোগ লাঘবের জন্য স্থানীয় কাউন্সিলর ও মাননীয় মেয়রকে ধন্যবাদ জানান নগরীর বিভিন্ন পরিবেশবিদসহ নদী নিরাপত্তার সামাজিক সংগঠনগুলো।

এ বিষয়ে নদী নিরাপত্তার সামাজিক সংগঠন নোঙর এর সভাপতি সামস সুমন দৈনিক বাংলাদেশের আলো-কে বলেন, আদি বুড়িগঙ্গা নদীটি হচ্ছে বুড়িগঙ্গারও আদি একটা চ্যানেল। তো আমরা দেখলাম যে, আমাদের দীর্ঘ আন্দোলনের ফলে আমাদের মেয়র আদি বুড়িগঙ্গা নদীটিকে রক্ষা করার জন্য ও দুষন মুক্ত করার জন্য তিনি নদী ও খালকে আলাদা করে যে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন, সেটা আমরা মনে করি যে, এটা দীর্ঘ আন্দোলনেরই সফলতার একটা অংশ। সম্প্রতি ঢাদসিক এর উদ্দোগে দীর্ঘদিনের যে জঞ্জাল এখান থেকে সরানো হচ্ছে এতে আমরা নোঙর এর পক্ষ থেকে মেয়র ও কাউন্সিলরদেরকে আমরা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি সেইসাথে যারা এর সাথে যুক্ত আছেন তাদেরকেও আমরা শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। পাশাপাশি একইরকম করে যেই সমস্থ এলাকায় এখনো এই ধরনের সমস্যা আছে সেইগুলোও যেন অপসারণ করা হয় এবং সেইখানে যেন আরও বেশি মনোযোগ থাকে মানুষদের সেই আশা করছি।

মেয়র এবং কাউন্সিলরদের জন্য আমরা এটা বলতে চাই, এই যে আদি বুড়িগঙ্গা নদীটা একেবারেই ঠোডা থেকে শুরু করে সেই যতখানি পর্যন্ত আমাদের ম্যাপে আমরা এই নদীটাকে দেখি, এই পুরো পরিবেশটাকেই যেন তারা ধারাবারিকভাবে এই উচ্ছেদ কিংবা এই যে পরিস্কার অভিযান যেটা সেটা যেন কন্টিনিউ করে।

বিশেষ করে আমাদের বলার যেটা সেটা হচ্ছে যে, আমরা নতুন করে আবার দেখতে চাই লকডাউনেও কিছু কিছু যায়গায় মানুষ কিন্তু দখলের জন্য আবারও নদীর পাড়ে নানা রকমের পায়তাড়া করছে, এগুলোকে স্থানীয় পর্যায়ে স্থানীয় কাউন্সিলর যারা আছেন তারা যদি একটু কঠিন করে মনিটরিং করে এবং এইখানে যদি কোন ছাড় না দেয় তাহলে আমার মনে হয় যে, এখন যে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হচ্ছে এই ধারাবারিকতা ঠিক থাকবে, এই ব্যপারে আমরা আস্থা রাখতে চাই, আর আরও বেশি আস্থা রাখবে দেশবাসী সেই প্রত্যাশা করি।

 বিআলো/শিলি