ভাঙছে গণফোরাম, নিরুপায় ড. কামাল 

ভাঙছে গণফোরাম, নিরুপায় ড. কামাল 


 নিজস্ব প্রতিবেদক: অভ্যন্তরীণ কোন্দলে এবার বিভক্তি হয়ে পড়েছে গণফোরাম। শেষ পর্যন্ত নিজের হাতে গড়া গণফোরামকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারছেন না দলটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. কামাল হোসেন। কেন্দ্রীয় কমিটিকে ভেঙে দেওয়ার পরও গৃহবিবাদ থেকে বেরুতে পারছে না দলটি। পাল্টাপাল্টি বহিষ্কার আর দুইপক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের মধ্যেই এবার বিক্ষুব্ধরা পৃথক বর্ধিত সভার আয়োজন করছে। এতে নতুন করে কোন্দলের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন দলটির নেতাকর্মীরা।

এর ধারাবাহিকতায় আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর গণফোরামের বর্ধিত সভা আহ্বান করেছে দলটির ভেঙে দেওয়া কমিটির এবং বহিষ্কৃত নেতারা। আর সেই সভা থেকে গণফোরাম নামে আরেকটি দলের সূচনা হতে যাচ্ছে। এর নেতৃত্বে দেখা যাবে দলটির সাবেক নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টুকে।

২৬ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে গণফোরামের বর্ধিত সভা ডেকেছেন সুব্রত চৌধুরী। এই বর্ধিত সভার সঙ্গে কোনও সংশ্লিষ্টতা না থাকার কথা উল্লেখ করে মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) প্রেস বিজ্ঞপ্তি পাঠান গণফোরামের বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সভাপতি কামাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া।

কামাল হোসেন ও রেজা কিবরিয়ার স্বাক্ষরে মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এ্ক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ওই সভার সঙ্গে গণফোরামের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

অন্যদিকে সুব্রত চৌধুরী বলছেন, বর্ধিত সভায় দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কামাল হোসেনকে আমন্ত্রণ জানাবেন তারা।

গণফোরামের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক লতিফুল বারী হামিম বলেন, ‘গণফোরামের বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া, ভেঙে দেওয়া কমিটির সহ-সভাপতি মহসীন রশীদ, সহ-সভাপতি শফিকউল্লাহ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাককে ছাড়া বাকি সবাইকে ২৬ সেপ্টেম্বর বর্ধিত সভার দাওয়া দেওয়া হয়েছে। ড. কামাল হোসেনের বাড়িতে গিয়ে তার হাতে বর্ধিত সভার চিঠি দিয়ে আসবেন আমাদের সিনিয়র নেতারা।’

২০১৮ সালের শেষ দিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর থেকেই নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে তৎপর হয়ে ওঠেন নেতারা। কেউ এর পক্ষে আবার কেউ বিপক্ষে অবস্থান নেন। কট্টরপন্থীরা বিএনপির সঙ্গে কোনো ঐক্য না গড়তে চেষ্টা করেন। অপরদিকে অপেক্ষাকৃত উদারমনা নেতারা বৃহত্তর স্বার্থে ঐক্য গড়ার পক্ষে শক্ত অবস্থান নেন। এর বাইরে বিশেষ কাউন্সিলে দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে জাতীয় সংসদে শপথ নেওয়ার পরও দলে মোকাব্বির খানের উপস্থিতি নিয়ে সরব হয়ে ওঠেন অনেকে। এর জের ধরে দলের প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিককে বহিষ্কার করা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন দলের একটি বৃহৎ অংশ। নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন অনেক সক্রিয় নেতা।

নির্বাচনের আগে দলে যোগ দেওয়া ড. রেজা কিবরিয়াকে সাধারণ সম্পাদক এবং অধ্যাপক আবু সাইয়িদকে নির্বাহী সভাপতির মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়। এতে দলের নতুন আরেকটি অংশ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। প্রকাশ্যে কিছু না বললেও ক্ষুব্ধ নেতারা রেজা কিবরিয়ার বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে থাকেন। বিভক্ত উদারমনা একটি অংশের সঙ্গে কট্টরপন্থী নেতারা যোগসাজশ করে আরেকটি বৃহৎ বলয় গঠনের উদ্যোগ নেন। এই দুই অংশের মধ্যেই চলছে এখন কাদা ছোড়াছুড়ির ঘটনা।

 বিআলো/শিলি