• যোগাযোগ
  • অভিযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    “মধ্য শাহ আলী বাগে গ্যাস নেই—চুলার আগুন নিভেছে, হৃদয়ের আগুন জ্বলছে” 

     dailybangla 
    19th May 2025 4:51 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানী ঢাকার মিরপুর-১ এর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত মধ্য শাহ আলী বাগ যেন এক আধুনিক যন্ত্রণার নাম। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের এই এলাকায় গ্যাসের সংকট এখন শুধুই নয়, একটি জীবনযাত্রার যন্ত্রণাময় অধ্যায়ে রূপ নিয়েছে।

    গত মার্চ মাস থেকে গ্যাস সরবরাহ অনিয়মিত থাকলেও ১৪ এপ্রিল ২০২৫ থেকে গ্যাস একেবারেই বন্ধ। প্রায় ৩০০টির বেশি পরিবার দিন পার করছেন গ্যাসহীন দুর্বিষহ জীবনে। এক সময়ের সজীব রান্নাঘরগুলো এখন যেন শোকগ্রস্ত নিস্তব্ধ মন্দির—চুলার আগুন নিভে গেছে, জ্বলছে শুধুই দীর্ঘশ্বাস আর অসহায়তা।

    একটি ঘরে আগুন না থাকলে, গোটা পরিবার ঠাণ্ডা হয়ে যায়, ৬০ বছর বয়সী এহতেসামুল বাবু চোখে জল নিয়ে বলেন, “চুলায় আগুন না থাকলে সংসার চলে না। প্রতি সন্ধ্যায় স্ত্রীর মুখের দিকে তাকিয়ে মনে হয়, আমি ব্যর্থ একজন মানুষ।” ৭০ বছরের মোঃ আলম চাঁন বলেন, “সারা জীবন এই শহরে কাটালাম। শেষ বয়সে এসে দেখি, এই শহর আমাদের ভালোবাসেনি, দায়িত্ব নেয়নি। এক মুঠো গ্যাসও দিতে পারল না।” ৩৭ বছরের শাহ্ আলী হতাশায় বলেন, “তিতাস অফিসে গিয়ে বারবার অভিযোগ করি, তারা শুধু বলে—‘দেখছি’। এই ‘দেখা’র কোনো শেষ নেই।”

    ৫৫ বছরের নুরনবী ও ৫৬ বছরের তাওহীদ বলেন, “এই ভয়ানক গরমে কয়লার চুলায় রান্না করতে গিয়ে আমরা শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছি। কিন্তু বিকল্প নেই। গৃহিণীরা একপ্রকার নরক যন্ত্রণায় দিন পার করছেন।”

    “মা, আজ গ্যাস আসবে?”—শিশুদের প্রশ্নেও এখন কান্না লুকানো থাকে। স্থায়ী বাসিন্দা আয়শা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমার ছোট বাচ্চাটা প্রতিদিন জিজ্ঞেস করে—‘মা, আজ গ্যাস আসবে?’ কীভাবে বলি, মা অসহায়!”
    রাদিয়া বেগম বলেন, “রান্না করতে পারি না, আর বাড়িওয়ালার কাছে অভিযোগ করলে বলেন—তিতাস দায়ী। মাঝখানে আমরা পুড়ছি।”

    লাভলী বলেন, “রান্না করতে না পারলে মনে হয় আমি কোনো কাজে লাগছি না। নিজেকে ব্যর্থ মনে হয়।”

    শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বাধা, চাকরিজীবীরা যাচ্ছেন না সময়মতো অফিসে। এই সংকটে সবচেয়ে বিপদে পড়েছে স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা ও চাকরিজীবীরা।

    মীর সাদিয়া, একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী বলেন, “ভোরে উঠে রান্না হয় না বলে সকালের খাবার না খেয়ে ক্লাসে যেতে হয়। মাথা ঘোরে, মন বসে না।”

    রায়হান করিম, একজন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবী, বলেন, “প্রতিদিন নাস্তা ছাড়া অফিসে যেতে হয়। স্ত্রী আগুন জ্বালাতে পারেন না, আমি ক্ষুধার্ত থাকি সারাদিন।” এলাকাবাসীর জোর দাবি—এই দুর্ভোগ যেন আর এক মুহূর্তও না টিকে। তাঁরা জ্বালানি উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এবং তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তাদের দ্রুত মাঠপর্যায়ে এসে সমস্যার স্থায়ী সমাধান করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

    বিআলো/তুরাগ

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    November 2025
    M T W T F S S
     12
    3456789
    10111213141516
    17181920212223
    24252627282930