শুরুতেই টাইগারদের শোচনীয় পরাজয়

শুরুতেই টাইগারদের শোচনীয় পরাজয়

স্পোর্টস ডেস্ক: আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের ৬ রানে হেরে গেছে বাংলাদেশ। এই হারের ফলে বিশ্বকাপ মিশনে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পরেছে সাকিব-রিয়াদদের।

ওমানে মাসকাটের আল-আমেরাত স্টেডিয়ামে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামে বাংলাদেশ। ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৪০ রান করে স্কটল্যান্ড। রান তাড়া করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রান করে বাংলাদেশ। ফলে স্কটল্যান্ডের কাছে ৬ রানের হার দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করলো টাইগাররা।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশের দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও লিটন কুমার দাস। তবে ইনিংস শুরুর দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি হাকিয়ে ভালো কিছুর আভাস দেন সৌম্য। কিন্তু পরের ওভারে আবার একই শটে তিনি ফিরলেন সাজঘরে। শুরুতেই সৌম্যকে হারিয়ে বিপদে পরে বাংলাদেশ। আউট হওয়ার আগে সৌম্য করেন ৫ বলে ৫ রান। সৌম্য শুরুতে ফেরার পর লিটনও তার পথ ধরলেন। দলীয় ১৮ রানে বাংলাদেশের দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ফিরে যায় সাজঘরে। এরপর সাকিবকে সঙ্গ দিতে উইকেটে আসেন মুশফিকুর রহিম।

শুরুতে দুই উইকেট হারিয়ে যখন কিছুটা চাপে পরে বাংলাদেশ। তখন সাকিব ও মুশফিক গড়ে তুলেন জুটি। তাদের জুটি ভাঙ্গে ৪৭ রানের পার্টনারশিপে। ক্রিস্টোফার গ্রিভস নিজের বোলিংয়ে প্রথম বলেই পেয়েছেন উইকেট। লেগ স্পিনারের বল মিড উইকেট দিয়ে তুলে মারতে গিয়ে সীমানায় ক্যাচ দেন ২৮ বলে ২০ রান করা সাকিব। এক ওভার পর এই লেগ স্পিনারকে উইকেট উপহার দেন মুশফিকুর রহিমও। উইকেট থেকে সরে স্কুপ করতে গিয়ে বল মিস করে বোল্ড হন মুশফিক। ৩৬ বলে ৩৮ রান করে মুশফিক সাজঘরে ফেরেন।

সাকিব এবং মুশফিক হারিয়ে যখন ফের বিপদে পরে বাংলাদেশ তখন বাংলাদেশের রানের চাকা সচল করেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও আফিফ হোসেন। শেষ ৩ ওভারে জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার ছিল ৩৭ রান। কিন্তু দ্রুত উইকেট হারায় টাইগাররা। আফিফ হোসেন ও কাজী নুরুল হাসান সোহান দ্রুত ফিরে যান সাজঘরে। এরপর ম্যাচ বাচানোর জন্য চেষ্টা করেছিলেন অধিনায়ক মাহামুদউল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু পারলেন না ইনিংস বড় করতে। সাজঘরে ফেরার আগে রিয়াদ করেন ২২ বলে ২৩ রান। শেষ দিকে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে সাথে নিয়ে জয়ের চেষ্টা করেন শেখ মেহেদি। কিন্তু চেষ্টা করেও ব্যর্থ ছিলেন। যার ফলে ৬ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশের।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চাপে পরে স্কটল্যান্ড। দলীয় ৫ রানেই প্রথম উইকেট হারায় স্কটল্যান্ড। প্রথম দুই ওভারে বাংলাদেশ উইকেটের দেখা না পেলেও তৃতীয় ওভারেই সাফল্য পান মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। তার করা চতুর্থ বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান কোয়েটজার।

কাইল কোয়েটজার সাজঘরে ফিরে গেলেও শুরু থেকেই ধীর গতিতে খেলতে থাকেন আরেক ওপেনার জর্জ মুনসি। এই ব্যাটার ম্যাথু ক্রসকে সাথে নিয়ে স্কটল্যান্ড রানের চাকা বড় করতে থাকে। কিন্তু শেখ মেহেদীর বলে জোড়া আঘাতে চাপে পড়ে স্কটল্যান্ড। প্রথমে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফিরে যান ম্যাথু ক্রস। আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ১৭ বলে ১১ রান।

এরপর ইনিংস বড় করতে থাকা জর্জ মুনসিকে সরাসরি বোল্ড করেন শেখ মেহেদি। আউট হওয়ার আগে এই ব্যাটসম্যান করেন ২৩ বলে ২৯ রান। মেহেদীর পর স্কটল্যান্ড শিবিরে জোড়া আঘাত হানে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তার শিকার রিচি বেরিংটন ও মাইকেল লিস্ক। রিচির ব্যাট থেকে আসে ৫ বলে ২ রান। আর মাইকেল কোন রান যোগ করার আগেই আউট হয়। এর কিছু পরেই প্যাভিলিইয়নে ফিরে যায় ক্যালাম ম্যাকলিওড। মেহেদীর বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন এই ব্যাটসম্যান।

দলীয় ৫৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে যখন চাপে পরে স্কটল্যান্ড। সেখান থেকে দলের রানের চাকা সচল করেন ক্রিস্টোফার গ্রিভস ও মার্ক ওয়াট। এই দুই ব্যাটসম্যান দেখে শুনে খেলতে থাকে তবে দলীয় ১০৪ রানে তাসকিনের বলে সৌম্যের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয় মার্ক ওয়াট। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে এই ব্যাটার করেন ১৭ বলে ২২ রান। তবে ঝড়ো ব্যাটিং করা ক্রিস্টোফার গ্রিভসকে আউট করেন মোস্তাফিজুর রহমান। আউট হওয়ার আগে এই ব্যাটার করেন ২৮ বলে ৪৫ রান। শেষ দিকে আর কোন ব্যাটসম্যানই উইকেটে দাঁড়াতে না পারলে ১৪০ রানেই থামে স্কটল্যানন্ডের ইনিংস।

বিআলো/শিলি