শাপলা চত্বরের রাত: ঘটনার প্রত্যক্ষ বিবরণ দিলেন প্রেস সচিব
নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের অভিযানে কী ঘটেছিল- সেই রাতের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা নিজের ফেসবুক পেজে তুলে ধরেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগ সরকার তখন যুবলীগ-ছাত্রলীগকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন ও ভয় দেখানোর কৌশল প্রয়োগ করেছিল এবং একই ধারা পরবর্তী ১১ বছর অব্যাহত ছিল।
সোমবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি লিখেন, শাপলা চত্বরকেন্দ্রিক সংঘর্ষের রাতেই হতাহতের খবর মিলতে শুরু করে। সে সময় তিনি এএফপি’র ঢাকা অফিসে কর্মরত ছিলেন, যা দিলকুশার শিল্প ব্যাংক ভবনে অবস্থিত ছিল। জানালা থেকেই তারা শাপলা চত্বর ও মতিঝিলজুড়ে হাজার দশেক হেফাজত সমর্থকের জমায়েত দেখতে পান।
রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে লাশ আনা শুরু হয়, তবে মৃত্যুর কারণ বা কোথায় মারা গেছে, কিছুই জানা যাচ্ছিল না। রাত আটটার দিকে প্রথম বড় তথ্য আসে মালিবাগের বারাকা জেনারেল হাসপাতাল থেকে হেফাজতের ছয়জন সমর্থকের মাথায় গুলিবিদ্ধ মরদেহ সেখানে নেওয়া হয়েছে। বহুবার ফোন করার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি নিশ্চিত করে। দ্বিতীয় উৎস থেকেও নিশ্চিত হওয়ার পর এএফপি তা প্রকাশ করে।
পরদিন কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে আরও মৃত্যু নিশ্চিত হয়। এরপর খবর আসে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় ভোররাতে বড় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বিজিবির গুলিতে প্রায় ২০ জন নিহত হন বলে হাসপাতাল সূত্রে তথ্য মেলে।
তিনি আরও লিখেন, তখনকার আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার বেনজীর আহমেদ পুলিশের গুলি করে হত্যা করার অভিযোগ অস্বীকার করেন। সরকার দাবি করে, তারা দেশকে ‘তালেবান রাষ্ট্র’ হওয়া থেকে রক্ষা করেছে এবং খুব সামান্য হতাহত হয়েছে। অথচ পুলিশের সাতজন মৃত্যুর তথ্যের বিপরীতে সাংবাদিকরা ৪৯ জনের তালিকা করতে বাধ্য হন।
তিনি বলেন, পুলিশের পক্ষ থেকে তখনো সাতজন মৃত্যুর তথ্য দেওয়া হলেও তাদের তালিকায় সংখ্যা ৪৯-এ পৌঁছে যায়। কর্তৃপক্ষ অস্বীকৃতি জানায়, কিন্তু হাসপাতালগুলো মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে।
পোস্টে তিনি দাবি করেন, পল্টনসহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় যুবলীগ-ছাত্রলীগের অস্ত্রধারী অংশও হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল। তাদের মধ্যে দুজনকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন, জাহিদ সিদ্দিকী তারেক ও রিয়াজ মিল্কি। পরে এই সহিংসতার ধারাই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কৌশলে রূপ নেয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিআলো/শিলি



