শ্রমিক প্রতিবাদের কারণে ইপিজেড বন্ধ, ক্ষতির মুখে শিল্পাঞ্চল
নাজমুল হুদা, নীলফামারী: একসময় রংপুর অঞ্চলের মঙ্গাপ্রবণ জেলা হিসেবে পরিচিত ছিল নীলফামারী। এ জেলায় উত্তরা ইপিজেড স্থাপিত হওয়ার পর থেকেই উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। খড়ের ঘর এবং চরম দারিদ্র্যের দৃশ্য এখন বিলীন। সেখানে কাজ করে জীবন-জীবিকা পরিবর্তন করছে প্রায় ৪০ হাজার নারী-পুরুষ।
কিন্তু হঠাৎই শ্রমিক অসন্তোষের আন্দোলনে ঘটে যায় নানা অপ্রত্যাশিত ঘটনা। একই দিনে বন্ধ হয়ে যায় ৪টি কোম্পানি। পরবর্তীতে শ্রমিকদের দাবী মেনে নিয়ে নতুনভাবে আবারও পরিচালনা শুরু হয় নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে।
চলতি মাসের ১৮ নভেম্বর, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয় নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডের সনিক বাংলাদেশ লিমিটেড কারখানার শতাধিক শ্রমিক। তারা অকারণে শ্রমিক ছাঁটাই, হয়রানী, পুনর্বহাল এবং কর্মস্থলে অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদসহ বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করে। এদিন বিকেলে কাজে যোগ না দেওয়ার কারণ দেখিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধের নোটিশ জারি করে কর্তৃপক্ষ।
কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে জানানো হয়, “কারখানার কোনো শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়নি। বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন–২০১৯ এর ধারা ২২ অনুযায়ী, শ্রমিকদের প্রাপ্য সুবিধাসহ চাকরির অবসায়ন কার্যকর করা হয়েছে। গত ১৬ নভেম্বর কিছু শ্রমিক বৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে কাজে যোগদান থেকে বিরত থাকে এবং কারখানার প্রধান ফটকের বাইরে বেআইনি দাবিদাওয়া উত্থাপন করে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করে। তারা পরবর্তীতে অন্যান্য শ্রমিকদের নিয়ে বেআইনিভাবে উৎপাদন বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করে।”
কর্তৃপক্ষ আরও জানান, শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে যে কোনো আইনসম্মত দাবি আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে সমাধান করার আশ্বাস দিলেও শ্রমিকেরা কাজে যোগ দেয়নি। ফলে ১৭ নভেম্বর মালিকপক্ষ তাদের দাবিগুলো পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত জানায়। তবুও শ্রমিকরা কাজে ফিরতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিশৃঙ্খল আচরণ অব্যাহত রাখে। ১৮ নভেম্বর কারখানার স্বাভাবিক কার্যক্রম চালানো সম্ভব না হওয়ায় কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে।
শ্রমিকদের একের পর এক দাবীর প্রেক্ষিতে উত্তরা ইপিজেডে অবস্থিত এভারগ্রীনসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানও বন্ধ হয়েছিল। ফলে কারখানার সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ না থাকায় আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে কোম্পানিগুলো। স্থানীয়রা বলছেন, আন্দোলন হটাও, ইপিজেড বাঁচাও।
বিআলো/ইমরান



