স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়ার পথিকৃত

স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়ার পথিকৃত

মো. কামরুল ইসলাম : কখনও কি শুনেছেন এয়ারলাইন্স নিজ খরচে পাইলট কিংবা ইঞ্জিনিয়ার তৈরি করে। আমরা অনেকেই স্বপ্ন দেখি, স্বপ্নকে লালন করি কিন্তু স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়ার জন্য কেউ এগিয়ে আসে তা খুব একটা দেখা যায় না। অনেক মেধাবি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে সারা দেশে। সেই মেধাবিদের মেধাকে কাজে লাগিয়ে দেশের ভবিষ্যৎ, এভিয়েশনের ভবিষ্যতকে সুরক্ষিত রাখতে স্টুডেন্ট পাইলট কিংবা ট্রেইনি এয়ারক্রাফট মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার তৈরির ভিন্ন এক পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে এসেছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রায় ১৫ মিলিয়ন বাংলাদেশীরা কাজের প্রয়োজনে, শিক্ষার প্রয়োজনে বাস করে হয়েছেন প্রবাসী। ইউএস-বাংলা স্বপ্ন দেখে পৃথিবীর সব দেশে বিশেষ করে বাংলাদেশী প্রবাসীরা অবস্থান করে এমন সব দেশে ফ্লাইট পরিচালনা করবে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রতিষ্ঠার ৮ বছরের মধ্যেই পৃথিবীর ৯টি দেশের ১১টি গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। বাংলাদেশী এয়ারলাইন্স হিসেবে প্রথম বারের মতো চেন্নাই, গুয়াংজু, মালের মতো অতিগুরুত্বপূর্ণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

আপনি বড় হবেন স্বপ্ন তার থেকে অনেক বড় হতে হবে। স্বপ্ন হতে হবে অধরা। প্রতিনিয়ত স্বপ্নের বিস্তৃতি ঘটতে থাকবে। তবেই না আপনার লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে থাকবেন। লক্ষ্য ছিলো স্বপ্ন পূরণের। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স এর এয়ারক্রাফট বাংলার আকাশে বিচরণ করবে। একসময় দেশের গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক আঙ্গিনায় ডানা মেলে উড়ে বেড়াবে। এখন সেই স্বপ্নগুলো একের পর এক পূরণ করে নিজেদের বিস্তৃতি করে এগিয়ে যাওয়ার পালা। 

দেশে অনেক জটিল রোগের চিকিৎসা অনেক সময় হয়ে উঠে না। প্রতি বছর বহু চিকিৎসা সেবার জন্য ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের হাসপাতালগুলোতে ভিড় করে। অনেক কষ্ট, শ্রম, অর্থ, সময় ব্যয় করে বিভিন্ন চিকিৎসালয়ে পৌঁছে চিকিৎসা নেয়া। অধিকাংশই আবার ভারত মহাসাগরের তীর ঘেঁষে দাড়িয়ে থাকা চেন্নাই এর বিভিন্ন হাসপাতালে যেয়ে চিকিৎসার জন্য গমন করতে দেখা যেতো। সবার কথা চিন্তা করে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ঢাকা কিংবা চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি চেন্নাইতে ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা নিতে গমনকারী যাত্রীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। 

বাংলাদেশের ব্যবসায়ী কিংবা ছাত্র-ছাত্রী সবার স্বপ্ন ছিলো ঢাকা থেকে চীনের কোনো একটি প্রদেশে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করা। কিন্তু সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে যাচ্ছিল। জাতীয় বিমান সংস্থাসহ জিএমজি এয়ারলাইন্স, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, রিজেন্ট এয়ারওয়েজ প্রত্যেকের স্বপ্নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো চীনে ফ্লাইট পরিচালনা কিন্তু ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়ে গত চার বছর ধরে চীনের অন্যতম গন্তব্য গুয়াংজুতে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করে যাচ্ছে।

ভারত মহাসাগরের তীর ঘেঁষে আরেক সৌন্দর্যের লীলাভূমি মালদ্বীপে রয়েছে লক্ষাধিক বাংলাদেশী। মালদ্বীপের সৌন্দর্য যেমন বাংলাদেশী পর্যটকরা উপভোগ করতে পারছিলো না তেমনি মালদ্বীপে অবস্থানকারী প্রবাসীরাও দেশে যাতায়াতের জন্য সরাসরি দেশীয় কোনো বিমান সংস্থার সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। ইতিমধ্যে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বাংলাদেশ আর মালদ্বীপের দূরত্ব কমিয়ে এনেছে। দেশীয় পর্যটকদের আকর্ষণের জায়গা করে নিয়েছে দ্বীপ দেশ মালদ্বীপ।

একটি দেশীয় এয়ারলাইন্স হিসেবে ইউএস-বাংলা বিশ্বের বিখ্যাত এয়ারলাইন্স এমিরেটস, কাতার এয়ারওয়েজ, ওমান এয়ার, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স, মালয়শিয়া এয়ারলাইন্স, চায়না ইস্টার্ণ এয়ারলাইন্স এর সাথে প্রতিযোগিতা করে যাচ্ছে। দেশের এভিয়েশন শিল্পের বিকাশ সাধনে ভূমিকা রেখে চলেছে। বিদেশী এয়ারলাইন্স এর একচেটিয়া আধিপত্যে কিছুটা হলেও অংশীদারিত্বের রেখা টেনে ধরছে।

দেশের জিডিপি’র প্রায় ৩ শতাংশ অংশীদারিত্ব রয়েছে এভিয়েশন ও পর্যটন খাতের। ইউএস-বাংলা সহ অন্যান্য এয়ারলাইন্সের অগ্রযাত্রায় দেশের এভিয়েশন শিল্প যদি লক্ষ্য মাত্রায় এগিয়ে যেতে পারে তবে একজন এভিয়েশন কর্মী হিসেবে স্বপ্ন দেখি দেশের জিডিপির অংশীদারিত্বে হবে ১০ শতাংশ। যা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর তুলনায় কোনো অংশই কম নয়।

দেশের বিমানবন্দরগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন দেশের এভিয়েশন শিল্পকে আরো বেশী গতিশীল করে তুলবে। দেশের আন্তর্জাতিক রুটের মার্কেট শেয়ারের প্রায় ৭০ শতাংশই বিদেশী এয়ারলাইন্স এর দখলে। ইউএস-বাংলা স্বপ্ন দেখে আন্তর্জাতিক রুটের মার্কেট শেয়ারের বৃহদাংশেই থাকবে বাংলাদেশী এয়ারলাইন্স এর দখলে। সেই সময়ের প্রত্যাশায় বাংলাদেশ এভিয়েশন।   

স্বপ্ন যত বড়ই হোক, সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে সকলের আস্থা আর বিশ্বস্থতার প্রতীক হয়ে উঠা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

মো. কামরুল ইসলাম: মহাব্যবস্থাপক-জনসংযোগ, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।