সিডনিতে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা: বাবা-ছেলের গুলিতে প্রাণ গেল ১৬ জনের
আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: অস্ট্রেলিয়ার সিডনির জনবহুল বন্ডি সমুদ্র সৈকতে ইহুদি সম্প্রদায়ের হানুকা উৎসব চলাকালে সংঘটিত ভয়াবহ বন্দুক হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ১৬ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ৪০ জনের বেশি।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেলে প্রায় দুই হাজার মানুষের উপস্থিতিতে এই হামলা ঘটে, যা গত তিন দশকে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংস ঘটনার একটি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, হামলায় জড়িত দুই সন্দেহভাজন একজন বাবা ও তার ছেলে। ৫০ বছর বয়সী বাবা ঘটনাস্থলেই নিহত হন এবং তার ২৪ বছর বয়সী ছেলে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হামলার সময় সৈকতের একটি পার্ক এলাকায় এলোপাতাড়ি গুলি চালানো হয়, যার ফলে উৎসবের আনন্দ মুহূর্তেই আতঙ্কে পরিণত হয়।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ এই ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী ও ইহুদিবিদ্বেষী অশুভ তৎপরতা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, আনন্দ ও উৎসবের দিনে এমন ঘৃণ্য সহিংসতা অস্ট্রেলীয় সমাজের মূল মূল্যবোধের ওপর আঘাত হেনেছে এবং এ ধরনের ঘৃণার কোনো স্থান দেশে নেই। নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস মিনসও ঘটনার পূর্ণ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন।
হামলার সময় সাহসিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন সিডনির এক মুসলিম ফল ব্যবসায়ী আহমেদ আল-আহমেদ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এক বন্দুকধারীকে পেছন থেকে জাপটে ধরে নিরস্ত্র করেন।
এ ঘটনায় নিজেও গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হলেও তার এই সাহসী ভূমিকা বিশ্বজুড়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুও তাকে ‘নায়ক’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
ঘটনার পর অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন শহরে ইহুদি উপাসনালয় ও হানুকা অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। নিউইয়র্ক, লন্ডন ও বার্লিনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। একই সঙ্গে ইসরাইল বিদেশে অবস্থানরত নাগরিকদের জনসমাবেশ এড়িয়ে চলার সতর্কতা জারি করেছে। সিডনির বন্ডি বিচ এলাকায় এখনও পুলিশি অভিযান ও নিরাপত্তা সতর্কতা অব্যাহত রয়েছে।
বিআলো/শিলি



