সিরাজগঞ্জ-১ আসনে বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশী সেলিম রেজা: দলের দুঃসময়ে মাঠে ছিলাম, মামলা-হামলা শিকার হয়েছি
রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় ১১টি মামলা ও হামলার শিকার
শহীদ জিয়ার আদর্শে নেতৃত্ব ও গ্রামাঞ্চলে সংগঠন তৈরি
সামাজিক ও শিক্ষামূলক প্রতিষ্ঠান তৈরিতে বিশেষ অবদান
ছাত্রদল থেকে সংসদ প্রার্থী : দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা
২০২০ সালে উপনির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন প্রাপ্তি
নিজস্ব প্রতিবেদক: সিরাজগঞ্জ-১ আসনের বিএনপি মনোনয়ন প্রত্যাশী মো. সেলিম রেজা দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রাম, সামাজিক অবদান এবং পারিবারিক প্রতিহিংসার মুখোমুখি হয়ে দলের জন্য কাজ করে গেছেন। পরিবারিক পরিবেশে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে প্রভাবিত হয়ে সেলিম রেজা ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে জড়িত হন। তিনি বলেন, দলের দুঃসময়ে আমি সর্বদা মাঠে ছিলাম।
বিএনপির রাজনীতিতে কঠোর সময় এসেছে, তখনও আমি দলের স্বার্থে কাজ করেছি। এরই ফলস্বরূপ, রাজনৈতিক হামলা, হয়রানি ও মামলা-দমন আমাকে ও আমার পরিবারকে শিকার করেছে। তবে এসব প্রতিবন্ধকতা আমাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। আমি দেশ ও দলের কল্যাণে আমার দায়িত্ব পালন করতে থাকব। আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে জয়লাভে সাহায্য করা এবং জাতীয়তাবাদী শক্তিকে সুসংগঠিত করা আমার মূল লক্ষ্য।

তিনি বলেন, দলের সঙ্গে আমি ১৭ বছর অবিচলভাবে থাকি, সেই সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক হামলা ও মামলা-প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন। আমি সর্বদা তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি এবং নিজের জীবন বাজি রেখে দলের কাজ সম্পন্ন করেছি। এই প্রতিশ্রতি ও সাহসের মাধ্যমে আমি বিএনপির আদর্শকে গ্রাম-গঞ্জে বাস্তবায়নের চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ পর্যন্ত আমি মোট ১১টি মামলা মোকাবিলা করেছি, যা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ হিসেবে আমার ওপর চাপানো হয়েছে। তবে এসব ঘটনায় আমার সংকল্প কমে যায়নি, বরং জনগণের সেবা এবং দেশের কল্যাণে কাজ করার আগ্রহ আরো দৃঢ় হয়েছে।
কলেজ জীবন থেকেই তিনি ছাত্রদলের বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন এবং নেতৃত্বের দক্ষতা অর্জন করেন। সেলিম রেজা নিজেকে শহীদ জিয়ার আদর্শের নির্ভীক সৈনিক হিসেবে দেখেন এবং গ্রামাঞ্চলে জনগণকে সচেতন ও সুসংগঠিত করার মাধ্যমে দেশের ধারাবাহিক উন্নয়নে অবদান রাখার লক্ষ্যে কাজ করে আসছেন। বর্তমানে তিনি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা কর্মসূচি দেশের জনগণের কাছে প্রচার এবং দলের ঐক্যবদ্ধতা বৃদ্ধিতে কাজ করছেন।

সামাজিক ক্ষেত্রে তিনি আফজাল হোসেন মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজ, কাজিপুর উপজেলা শিশুকল্যাণ ট্রাস্ট বোর্ড, চালিতাডাঙ্গা দারলু উলুম কওমি মাদ্রাসা ও স্থানীয় কবরস্থান ও জামে মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছেন। এছাড়া তিনি স্থানীয় বিদ্যালয় ও ইউনিয়ন পরিষদে জমিদান ও দান প্রদান করেছেন। মো. সেলিম রেজার বাবার নামে প্রতিষ্ঠিত আফজাল হোসেন মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজে তার ভাই প্রিন্সিপালের দায়িত্বে থাকলেও রাজনৈতিক কারণে কলেজে প্রবেশ করতে পারেননি।
শিক্ষাজীবনে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনায় বি.কম (সম্মান) ও এম.কম ডিগ্রি অর্জন করেন।
রাজনৈতিক দায়িত্বে তিনি ছাত্রদল থেকে শুরু করে কাজিপুর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি, আহŸায়ক, সভাপতি, সদস্য সচিব ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহŸায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি কাজিপুর উপজেলা বিএনপির দুইবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০২০ সালে তিনি সিরাজগঞ্জ-১ (কাজিপুর ও সদর আংশিক) উপনির্বাচনে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেন।
২০০১ সালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংঘর্ষে এক ছাত্রলীগ কর্মীর নিহত হওয়ার মামলায় তার পরিবার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়। ২০১০ সালে পাঁচজনের ফাঁসি ও দশজনের যাবজ্জীবন দন্ডের রায় হয়। ফাঁসির তিনজন এখনও কারাগারে এবং দুইজন পলাতক। মামলাগুলো চলমান থাকায় পরিবারের সদস্যরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
২০১৮ সালের ৩১শে আগস্ট মধ্যরাতে হত্যার উদ্দেশে পুলিশের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের যৌথ হামলায় বাড়িঘর ভাংচুরসহ বৃদ্ধ মা, ভাগ্নী, ভাগ্নী জামাই, তাদের শিশু সন্তান মারাত্মকভাবে আহত হয়। ২০২২ সালে কোরবানির ঈদের রাতে আবারও তার বাড়ি ও গাড়িতে হামলা চালানো হয়, যা স্থানীয় জনগণকে আতঙ্কিত করে।
মো. সেলিম রেজা জন্মগ্রহণ করেন ১১ জানুয়ারি ১৯৬৪ সালে। তিনি ইসলাম ধর্মাবলম্বী বাংলাদেশী নাগরিক। তিনি কাজিপুর উপজেলার পরিচিত রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান এবং তাঁর বাবা মরহুম আফজাল হোসেন সরকার ছিলেন কাজিপুর থানা জাগদলের সভাপতি ও কাজিপুর থানা বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি। দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রাম, সামাজিক সেবা এবং পারিবারিক রাজনৈতিক ঐতিহ্যকে ধারণ করে তিনি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে জনগণের কল্যাণ ও দলের উন্নয়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
বিআলো/এফএইচএস



