হোসেনপুরে গোয়ালঘরে থাকা সেই বৃদ্ধা মায়ের পাশে ইউএনও

হোসেনপুরে গোয়ালঘরে থাকা সেই বৃদ্ধা মায়ের পাশে ইউএনও

হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি : কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে সন্তানের অবজ্ঞা,অবেহেলায় সমলা বিবি নামে ৮১ বছরের এক বৃদ্ধা মায়ের ঠাঁই হয়েছিলো গরু রাখার গোয়ালঘরে। 

খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করতেন তিনি। উপজেলার শাহেদল ইউনিয়নের শাহেদল দক্ষিণ পাড়া গ্রামের আব্দুল নবীর দ্বিতীয় স্ত্রী সমলা বিবির দু:খ দুরাবস্থার খবর শুনে সোমবার সকালে নিজের দায়িত্ববোধ থেকে তার বাড়িতে দেখতে গেলেন ইউএনও শেখ মহি উদ্দিন। সঙ্গে ছিলেন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. খলিলুর রহমান, শাহেদল ইউপি চেয়ারম্যান শাহ মাহবুবুল হক, মডেল প্রেসক্লাবে সভাপতি এস এম তারেক নেওয়াজসহ স্থানীয় গ্রামবাসী। 

হোসেনপুরের ইউএনও শেখ মহি উদ্দিন সমলা বিবির মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন, আমি আপনার কাছে একজন ইউএনও হিসেবে আসিনি। আমি একজন সন্তান হিসেবে এসেছি। আপনার যে কোনো সমস্যায় আপনি আমাকে পাশে পাবেন। এ সময় তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ওই বৃদ্ধা মাকে আর্থিক সহায়তা ও বয়স্ক ভাতা কার্ড হাতে তুলে দেন। ওই বৃদ্ধা মায়ের চলাফেরার জন্য একটি হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা গ্রহন করেন। 

তিনি আরো জানান, ইত.মধ্যে কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য মো. মাসুদ আলম নিজ অর্থায়নে ওই বৃদ্ধা মায়ের বসবাসের জন্য একটি ঘর নির্মানের আশ্বাস দিয়েছেন। সন্তানদের উদ্যোশে ইউএনও শেখ মহি উদ্দিন বলেন, এরকম একজন বয়স্ক বৃদ্ধা মাকে দীর্ঘদিন গোয়ালঘরে রাখা চরম অন্যায়। তিনি খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করতেন। সরকার বৃদ্ধ মা-বাবার ভরণপোষণ আইন করেছে। আইনে ভরণপোষণ করা বাধ্যতামূলক। ভরণপোষণ না করলে জেল-জরিমানা হবে। 

এ সময় সন্তানেরা তাদের ভুল স্বীকার করে ইউএনওর সামনে বৃদ্ধা মায়ে পায়ে ধরে ক্ষমা চান এবং মায়ের ভরণপোষণ করার অঙ্গীকার করেন। 

উল্লেখ্য, ৮১ বছরের বৃদ্ধা মায়ের ৪ ছেলে সবাই ভালো পরিবেশে বসবাস করছেন। আয় রোজগারও ভালো কিন্তু ছেলেদের পক্ষথেকে মায়ের জন্য খাবারটুকুও দেওয়া হতো না। যখন যেমন চেয়ে পাওয়া যায় তাই খেয়ে কোনোমতে বেঁচে আছেন সমলা বিবি। এমন অবস্থা দেখে মেয়ের জামাই মো. মানিক মিয়া এগিয়ে এসে থানা পুলিশের সহযোগিতা নেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইতিপূর্বে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সোনাহর আলী ও হোসেনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।