হাদির খুনিদের বিচারের দাবিতে মধ্যরাতে উত্তাল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
ইবি প্রতিনিধি: চব্বিশের জুলাই বিপ্লবের সম্মুখ যোদ্ধা, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন আবাসিক হল ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
মিছিল চলাকালে শিক্ষার্থীরা
‘যে ভারত খুনি পালে, সেই ভারত ভেঙে দাও’,
‘দল–শিবির–জনতা, গড়ে তুলো একতা’,
‘আওয়ামী লীগ দেখে যা, আইতাছে তোর বাপেরা’,
‘কসাই মুদী দেখে যা, আইতাছে তোর বাপেরা’,
‘আমরা সবাই হাদি হবো, বুক পেতিয়ে লড়ে যাবো’,
‘বাড়াবাড়ি করো না, সেভেন সিস্টার থাকবে না’—
এমন বিভিন্ন স্লোগান দেন।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ইউসুব আলী। তিনি বলেন,
“ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে বলিষ্ঠ কণ্ঠ ছিল ওসমান হাদি। আমরা এসেছি এই আধিপত্যবাদের কবর দিতে। এক হাদিকে হত্যা করলে লক্ষ হাদি জন্মাবে। হাদি ভাইয়ের স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়ন করবো। আধিপত্যবাদের কবর না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরবো না। বাংলাদেশের সতেরো কোটি জনগণ সার্বভৌমত্বে আঘাত মেনে নেবে না।”
ইবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব মাসুদ রুমি মিথুন বলেন,
“হাদি ছিলেন একজন স্বচ্ছ দেশপ্রেমিক, জুলাইযোদ্ধা ও প্রকৃত আধিপত্যবাদবিরোধী। হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার প্রেতাত্মারা এখনো পালায়নি। যেখানে তাদের পাওয়া যাবে, সেখানেই গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। আমরা সবাই হাদি ভাইয়ের স্বপ্ন লালন করবো এবং তা বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক এসএম সুইট বলেন,
“আজ আরেকটি জুলাই নেমে এসেছে। হাদিকে হত্যা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। আমরা জেনেছি খুনিরা ভারতে পালিয়েছে। বাংলাদেশের সকল গোয়েন্দা সংস্থার সংস্কার প্রয়োজন। কোনো না কোনো গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় খুনিরা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। ভারত শেখ হাসিনা ও খুনিদের আশ্রয় দিয়েছে। সকল ফ্যাসিস্ট সংগঠন ধ্বংস করতে হবে, নয়তো দেশের অস্থিরতা থামবে না।”
তিনি আরও বলেন,
“আমরা বিদেশি কোনো প্রভুর আধিপত্য আর মানবো না। হাদি অভ্যুত্থানের দেড় বছর পরেও জুলাই বিক্রি করেনি।”
সমাবেশ থেকে বক্তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ, ভারতের সঙ্গে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করা এবং অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সকল জুলাই যোদ্ধার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন শরিফ ওসমান হাদি। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হলে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন।
বিআলো/তুরাগ



