• যোগাযোগ
  • অভিযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনে গুলি চালানোর নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা: আল জাজিরা 

     dailybangla 
    24th Jul 2025 5:55 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    নিজস্ব প্রতিবেদক: আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা তাদের অনুসন্ধানী ইউনিট (I-Unit)-এর এক বিস্ফোরক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলন দমন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যেখানে পাও, সেখানে গুলি চালাও” বলে নির্দেশ দেন। এই তথ্য উঠে এসেছে তার একাধিক ফাঁস হওয়া ফোনালাপে, যা রেকর্ড করেছিল জাতীয় টেলিযোগাযোগ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র (NTMC)।

    ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই রেকর্ড হওয়া এক ফোনালাপে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, আমার নির্দেশ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ ওপেন অর্ডার আমি দিয়ে দিয়েছি। এখন ওরা লেথাল ওয়েপন ব্যবহার করবে। যেখানেই পাবে, গুলি করবে।

    এই কথোপকথনে তিনি আরও বলেন, এখন হেলিকপ্টার থেকেও নজরদারি এবং হামলা শুরু হয়েছে। ঢাকার দক্ষিণের মেয়র ও শেখ হাসিনার আত্মীয় শেখ ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে কথোপকথনে তিনি বলেন, যেখানে জটলা দেখবে, ওপর থেকে-এখন ওপরে থেকেই হচ্ছে-শুরু হয়ে গেছে কয়েক জায়গায়।

    আল জাজিরা জানায়, এসব ফোনালাপ অডিও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দ্বারা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তারা নিশ্চিত করেছেন, এটি কৃত্রিমভাবে তৈরি বা পরিবর্তন করা হয়নি এবং ভয়েস ম্যাচিংয়ের মাধ্যমে বক্তাদের সনাক্ত করা গেছে।

    ২০২৪ সালের জুন-জুলাইয়ে শুরু হওয়া ছাত্র বিক্ষোভে সরকারি বাহিনীর অভিযানে প্রায় ১,৪০০ জন নিহত এবং ২০,০০০ এর বেশি আহত হন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (ICT)।

    এই ঘটনার প্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তার মন্ত্রিসভার সদস্য ও নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। ১০ জুলাই শেখ হাসিনা ও আরও দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে এবং আগস্টে বিচার শুরু হওয়ার কথা।

    রংপুরের এক ছাত্র আবু সাইদের গুলিতে মৃত্যুই এই আন্দোলনের অন্যতম মোড় পরিবর্তনকারী ঘটনা। আল জাজিরার অনুসন্ধানে উঠে আসে, শেখ হাসিনার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান সাইদের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন গোপন বা পরিবর্তনের চেষ্টা করেন।
    রংপুর মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক ডা. রাজীবুল ইসলাম জানান, পুলিশ তাকে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাঁচবার পাল্টাতে বাধ্য করেছিল।

    ওরা চেয়েছিল রিপোর্টে লেখা হোক, সাইদ পাথরের আঘাতে মারা গেছে, যদিও সে গুলিতে মারা যায়।

    আবু সাইদ মৃত্যুর ১২ দিন পর তার পরিবারসহ প্রায় ৪০টি শহীদ পরিবারকে ঢাকায় গণভবনে ডেকে এনে ভিডিও ক্যামেরার সামনে শেখ হাসিনা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। সাইদের বোন সুমি খাতুন তখন বলেন, ভিডিওতেই দেখা গেছে পুলিশ তাকে গুলি করেছে। এখানে তদন্তের কী আছে? এখানে আসাটাই ভুল হয়েছে।

    সাইদের বাবা বলেন, ওরা আমাদের জোর করে নিয়ে এসেছে, না আসলে হয়তো আরও খারাপ কিছু করত।

    আওয়ামী লীগের এক মুখপাত্র দাবি করেন, শেখ হাসিনা কখনও lethal weapons বা প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেননি। তার ফোনালাপগুলো চেরি-পিকড, বিকৃত বা কৃত্রিমভাবে তৈরি বলে দাবি করা হয়েছে। তারা আরও দাবি করে, আবু সাইদের মৃত্যু নিয়ে তদন্ত ছিল সত্যিকারের ও আন্তরিক।

    এই আন্দোলনের সূচনা হয় ২০২৪ সালের জুন মাসে, যখন উচ্চ আদালত ১৯৭১ সালের মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য কোটা পুনর্বহাল করে। শিক্ষার্থীরা দাবি করে, এই কোটা ব্যবস্থা আওয়ামী লীগের সমর্থকদের বাড়তি সুবিধা দেয় এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি পাওয়া সম্ভব হয় না।

    আল জাজিরার এই অনুসন্ধান বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন এক মোড় এনে দিয়েছে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রমাণিত হলে এটি হবে আন্তর্জাতিকভাবে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি নজির। আগস্টে শুরু হতে যাওয়া এই বিচার আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

     তথ্যসূত্র:-

    Al Jazeera Investigative Unit (I-Unit)

    International Criminal Tribunal (ICT), Bangladesh

    NTMC Internal Surveillance Logs

    বিআলো/এফএইচএস

     

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    November 2025
    M T W T F S S
     12
    3456789
    10111213141516
    17181920212223
    24252627282930