২৮ দিন পর শাহজালালের উপাচার্যের দুঃখ প্রকাশ

২৮ দিন পর শাহজালালের উপাচার্যের দুঃখ প্রকাশ

সিলেট ব্যুরো: সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের গুলি ও লাঠিপেটার ঘটনাকে ‘অনাকাক্সিক্ষত’ বলে ২৮ দিন পর দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। শনিবার সকাল ১০টার দিকে এক সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনের সামনে গত ১৬ জানুয়ারি পুলিশি হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। বেলা পৌনে দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ইশফাকুল হোসেন বলেন, উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ১৬ জানুয়ারির ঘটনাটিকে অনাকাক্সিক্ষত জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে একটি বিবৃতি দিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে উপাচার্য কার্যালয়ে উপাচার্য, ডিন, বিভিন্ন বিভাগের প্রধান, জ্যেষ্ঠ শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিয়ে সংক্ষিপ্ত মতবিনিময় করেন। সেখানে উপাচার্যকে গত ১৬ জানুয়ারি পুলিশি হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দেওয়ার পরামর্শ দেন শিক্ষামন্ত্রী। এরপর উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ গণমাধ্যমে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ বিবৃতি দেন।

উপাচার্য বিবৃতিতে বলেন, ‘আমাদের প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া অনাকাক্সিক্ষত ঘটনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা- কর্মচারীসহ যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের সবার প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা ও সহমর্মিতা প্রকাশ করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবক হিসেবে ঘটে যাওয়া অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। ওই ঘটনার ধারাবাহিকতায় সৃষ্ট অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী যাঁরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’

উপাচার্য বিবৃতিতে আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দর ও স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে আনার জন্য আমি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের এই প্রিয় প্রতিষ্ঠানটিকে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করা সম্ভব হবে।’

গত ১৩ জানুয়ারি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন কয়েক শ ছাত্রী। ১৬ জানুয়ারি দাবি আদায়ের লক্ষ্যে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে এবং তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পরে এই আন্দোলন উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রূপ নেয়।

প্রথম ছয় দিনে দাবি পূরণ না হওয়ায় ১৯ জানুয়ারি বেলাতিনটা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী। ২৬ জানুয়ারি সকালে অনশনস্থলে গিয়ে লেখক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক মুহম্মদ জাফর ইকবাল শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান। তবে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।

বিআলো/শিলি