৮৭ কোটি টাকা মানিলন্ডারিং: গাজীসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে সিআইডির মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজনীতির প্রভাব, ভুয়া দলিল আর জমিজবরদখলের এক জটিল জাল উন্মোচন করেছে সিআইডি। দীর্ঘ ৯ বছরে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে শতকোটি টাকার সম্পদ হাতবদলের অভিযোগে এবার সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে রূপগঞ্জে।
সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এবং নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের সাবেক এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী (৭৭) ও তার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী এমদাদুল হক (৫২)সহ মোট আটজনের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) রূপগঞ্জ থানায় এ মামলা (নং–৪৩) দায়ের করা হয়।
মামলার অন্যান্য অভিযুক্ত হলেন— সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নীলা (৫৭), তোফায়েল আহমেদ আলমাছ (৫৫), মো. মাহাবুবুর রহমান জাকারিয়া মোল্লা (48), মো. আনছার আলী (55), আলফাজ উদ্দিন (63) এবং দিমন ভূঁইয়া (55)।
এজাহারে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা অজ্ঞাত আরও ৭–৮ জনকে সঙ্গে নিয়ে একটি সংঘবদ্ধ অপরাধচক্র গঠন করেন। তারা ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ২০ জুলাই পর্যন্ত প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে ভুয়া দলিল তৈরি করে মোট ২৪০১.৪৬ শতাংশ জমি জবর দখল, হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করেন। সরকারি বাজারদর অনুযায়ী এসব জমির মূল্য ৮৬ কোটি ৭৮ লাখ ৮৭ হাজার ৬৪৪ টাকা।
জমিগুলো মালিকানাধীন ছিল— মো. শাহ আলম, আব্দুস সোবহান মিয়া, নাঈম প্রধান, হাসিনা বেগম, আলেয়া, ইয়াছিন প্রধান, সানজুরা বেগম, মো. আশরাফ উদ্দিন ভূঁইয়া, মোস্তফা মনোয়ার ভূঁইয়া, মো. হাবিব খান, রাশিদা ভূঁইয়া, আমজাদ আলী ভূঁইয়া, মোবারক ভূঁইয়া, নূর-ই-তাছলীম তাপস, মো. মাহবুবুল হক ভূঁইয়া ও মোহাম্মদ মাহমুদুল হকের।
এর আগে সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত (ঢাকা) পিটি নং–৬৮৪/২০২৫ মূলে উক্ত সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ দেন। বর্তমানে ক্রোককৃত জমির বাজারমূল্য প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। আদালত সিআইডির প্রধান (অ্যাডিশনাল আইজিপি)-কে এই সম্পত্তির রিসিভার হিসেবে নিয়োগ করেছেন।
মামলাটির তদন্ত করছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট। অপরাধ চক্রের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অজ্ঞাত সদস্যদের শনাক্তকরণ ও আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে তাদের অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।
রূপগঞ্জ থানার ওসি সাবজাল মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, “মামলাটি থানায় দায়ের হলেও তদন্ত সিআইডি করছে।”
বিআলো/তুরাগ



