ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা: মার্কিন রণতরীর অবস্থান পরিবর্তন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানীতে হামলায় দুই জেনারেলসহ ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের সাত সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছে ইরান। এর ফলে বড় ধরনের যুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ইসরায়েল সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে হামলার কথা স্বীকার করেনি। তবে এ হামলার পেছনে ইসরায়েলের হাত রয়েছে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে ইসরায়েলে ইরানের হামলার শঙ্কায় মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েন মার্কিন রণতরীর অবস্থান পরিবর্তন করেছে বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন কিরবি।
তিনি বলেন, মিত্র ইসরায়েলের ওপর ইরানের যেকোনো হামলা রুখে দিতে পুরোপুরি প্রস্তুত মার্কিন বাহিনী। আর তা জানান দিতে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত মার্কিন রণতরী স্থান পরিবর্তন করেছে।
তবে তিনি মার্কিন বাহিনীর স্থান পরিবর্তন বা কোনো পথে এগোচ্ছে তা খোলাসা করেননি। মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ‘ইউএসএস আইজেনহাওয়ার’ সহ নৌবাহিনীর আরও যুদ্ধযান বর্তমানে লোহিত সাগর ও ভূমধ্যসাগরে অবস্থান করছে।
এদিকে শতাধিক ড্রোন এবং কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র ইতোমধ্যে প্রস্তুত করেছে ইরান। তবে শিগগিরই ইসরায়েলে হামলা না করতে ইরানকে সতর্ক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শুক্রবার (১২ এপ্রিল) হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বাইডেন বলেন, আমরা আশঙ্কা করছি, ইরান শিগগিরই ইসরায়েলে হামলা করতে পারে। তবে তেহরানকে শিগগিরই হামলা না করতে সতর্ক করছি।
তিনি বলেন, আমরা ইসরায়েলকে রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা যেকোনো সময় ইসরায়েলকে সমর্থন করব। তাদের রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র যেকোনো ধরনের সহায়তার জন্য সব সময় প্রস্তুত। তাই ইরান কখনও সফল হবে না।
গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে যুদ্ধবিমান থেকে হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে নিহত হন দেশটির শীর্ষস্থানীয় দুই সামরিক কর্মকর্তাসহ ৭ জন। এরপর সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেছেন, এই কর্মকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলকে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। এ ঘটনার পর ইরান ও ইসরায়েল-দুই দেশ ভ্রমণে নিজেদের নাগরিকদের সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশ। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন ইসরায়েলের জনগণও।
মার্কিন দূতাবাসের বরাত দিয়ে বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, নিজ কর্মীদের বৃহত্তর জেরুজালেমের বাইরে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে তেল আবিব ও বির শেভা এলাকা এ সতর্কতার আওতামুক্ত থাকবে।
এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘ইসরায়েলি সেনাবাহিনী অন্যান্য ফ্রন্ট থেকে চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমাদের সাধারণ একটি নীতি আছে: যারা আমাদের আঘাত করবে, আমরা তাদের আঘাত করব।’
ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল জানায়, দক্ষিণ অথবা উত্তর ইসরায়েলে ইরানের সম্ভাব্য হামলা মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে তেল আবিব। তবে তেহরান এখনও এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। এর আগে পশ্চিমা গণমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোতে দাবি করা হয়, সরাসরি ইসরায়েল অথবা ইসরায়েলের স্বার্থ রয়েছে এমন স্থাপনায় ইরানের হামলা আসন্ন।
বিআলো/শিলি