পূর্ব বিরোধে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হত্যা, ৪ তরুণ গ্রেপ্তার
নিউজ ডেস্ক: নড়াইলের লোহাগড়ায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিকদার মোস্তফা কামালকে নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রধান আসামিসহ (শ্যুটার) অন্যতম চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। চট্টগ্রামের বায়েজিদ ও নড়াইল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সাজেদুল মল্লিক (২৫), পাভেল শেখ (২৮), মামুন মোল্যা (২৬) ও মো. রহমত উল্লাহ শেখ (১৯)। গত রাতে র্যাব-৬, র্যাব-৭ এবং র্যাব-১০-এর যৌথ আভিযানিক দল চট্টগ্রামের বায়েজীদ ও নড়াইল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়।
আজ শুক্রবার কারওয়ান বাজার কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে র্যার আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক আরাফাত ইসলাম এ তথ্য দেন।
তিনি বলেন, গত ১০ মে নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালকে কতিপয় দুর্বৃত্তরা অতর্কিত হামলা করে ও এলোপাথারি গুলি করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার সময় মোস্তফা কামাল মৃত্যুবরণ করেন। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে গত ১৩ মে লোহাগড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তিনি বলেন, একজন সাবেক ইউপি সদস্য হত্যাকান্ডের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, দীর্ঘ বিরোধের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও একই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আকবর হোসেন লিপন-এর মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব থেকে শত্রতা বিরাজমান ছিল।
২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে পূর্ব বিরোধের জের ধরে ভিকটিম মোস্তফা কামাল এবং আকবর হোসেন লিপন-এর অনুসারীদের মধ্যে একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সংঘর্ষে লিপন গুরুতর আহত হয় এবং তার একটি হাত কাটা পড়ে। পরবর্তীতে লিপন ও তার অনুসারীরা মোস্তফা
কামাল এর উপর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকে। লিপনের নির্দেশনায় ঘটনার দিন সকালে তার ছোট ভাইয়ের বাড়িতে গ্রেপ্তারকৃত সাজেদুলসহ অন্যান্য আসামিরা ভিকটিম মোস্তফা কামালকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী মোস্তফা কামালের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে ঘটনার দিন সন্ধায় গ্রেপ্তারকৃত সাজেদুলসহ অন্যান্য আসামিরা সুইচ গিয়ার চাকু, রাম দাসহ বিদেশি অস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়ে ওৎ পেতে থাকে। এ সময় মোস্তফা কামাল ঘটনাস্থলে পৌঁছামাত্রই সুযোগ বুঝে গ্রেপ্তারকৃত সাজেদুলের হাতে থাকা বিদেশি পিস্তল দিয়ে মোস্তফা কামালকে লক্ষ্য করে ৩ রাউন্ড গুলি করে। যার মধ্যে ২ রাউন্ড গুলি
তার বুকে ও পিঠে লাগে এবং গুরুতর আহত হয়।
পরবর্তীতে গ্রেপ্তারকৃত সাজেদুলসহ অন্যান্য সহযোগী আসামিরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেপ্তার এড়াতে ঢাকা, পতেঙ্গা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে। আত্মগোপনে থাকাকালীন অবস্থায় চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকা থেকে সাজেদুল, পাভেল ও মামুন র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়। গ্রেপ্তারকৃত সাজেদুল এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গ্রেপ্তারকৃত রহমত উল্লাহকে নড়াইল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। উক্ত হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারসহ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রটি উদ্ধারে র্যাবের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বিআলো/শিলি